বাড়ছে ডায়রিয়া, আইসিডিডিআরবিতে দ্বিগুণ ভিড়
রাজধানী ও আশপাশের এলাকায় পানিবাহিত ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ছে। প্রতিদিনই স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি রোগী আসছে রাজধানীর মহাখালীর আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্রে (আইসিডিডিআরবি)।
তবে বিশেষজ্ঞরা এতে ‘আতঙ্কের’ কিছু দেখছেন না। তাঁদের মতে, গরমের কারণে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত কিছু রোগী বেশি আসছে। এ জন্য সাধারণ মানুষ বিশেষ করে শিশুদের প্রতি একটু বাড়তি যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।
আইসিডিডিআরবির ডায়রিয়া বিভাগের প্রধান আজহারুল ইসলাম খান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘স্বাভাবিক সময়ে এখানে দুই থেকে আড়াইশ রোগী আসে। এখন চারশ থেকে সাড়ে চারশ রোগী আসছে। এদের মধ্যে ৬০ ভাগ পূর্ণ বয়স্ক এবং বাকি ৪০ ভাগ শিশু। তবে মার্চ-এপ্রিলে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেশি থাকে। তখন হয়তো দিনে আটশ থেকে এক হাজার রোগীও এখানে আসে।
ডায়রিয়া পানিবাহিত রোগ হলেও, পচা-বাসী খাবার খেয়ে এ রোগে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে উল্লেখ করে আজহারুল ইসলাম খান বলেন, ‘আইসিডিডিআরবিতে আসা রোগীদের মধ্যে রাজধানীর বাড্ডা, তেজগাঁও, যাত্রাবাড়ী, বসিলা এবং রাজধানীর বাইরের নারায়ণগঞ্জের রোগীর সংখ্যা বেশি।’
এ সময়ে শিশুদের (জন্ম থেকে ১২ বছর বয়সী) প্রতি অভিভাবকদের একটু বাড়তি যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে আইসিডিডিআরবির এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘বিশেষ করে ফাস্ট ফুড এই সময়টাতে কম খাওয়ানোই ভালো। খাওয়ালেও লক্ষ রাখতে হবে এতে তার কোনো অস্বস্তি হচ্ছে কি না বা তার মধ্যে বমি বমি ভাব হচ্ছে কি না। অনেক সময় বাচ্চারা এই বিষয়গুলো মা-বাবার কাছে লুকিয়ে যায়।’
তবে গরমে পাতলা পায়খানার সাথে যদি শরীর গরম থাকে বা জ্বর এসে যায় তাহলে দেরি না করে নিকটস্থ কোনো স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বা হাসপাতালে নিয়ে আসাই ভালো। কিন্তু খাবার স্যালাইন খানিক পর পরই চালিয়ে যেতে হবে বলে পরামর্শ দিয়েছেন আইসিডিডিআরবির বিশেষজ্ঞ। আজহারুল আরো বলেন, ‘এ ব্যাপারে ব্যক্তিগত ও পারিবারিকভাবে পরিচ্ছন্ন থাকাটাই জরুরি।’
এদিকে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহে ঢাকা বিভাগের তাপমাত্রা সর্বোচ্চ সাড়ে ৩৬ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড থেকে ৩০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে। এর ওপর বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল কম। কিন্তু বুধবার বৃষ্টি হওয়ার কারণে তাপমাত্রা খানিকটা নেমে আসে।
বুধবার দুপুরে আইসিডিডিআরবিতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে রোগীদের ভিড় আছে। বাইরে ত্রিপলের শামিয়ানার নিচেও রোগীদের সেবা দিচ্ছেন হাসপাতালের কর্মীরা।
বাড্ডা থেকে ব্যবসায়ী শফিকুল তাঁর ভাতিজাকে নিয়ে আজ বুধবার সকালেই আইসিডিডিআরবিতে এসেছেন। তিনি জানান, ‘সকাল থেকেই তাঁর ভাতিজার পাতলা পায়খানা শুরু হয়। শরীরও গরম ছিল। তাই এখানে নিয়ে এসেছেন। চিকিৎসক তাঁকে জানিয়েছেন, ভয়ের কিছু নেই। আজ অথবা কালই তিনি ভাতিজাকে নিয়ে বাসায় ফিরে যেতে পারবেন।’