কঙ্কালবাড়ির পর কলকাতায় মিলল জঞ্জালবাড়ি
পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার একটি বাড়িতে কঙ্কাল পাওয়ার রহস্য মিটতে না মিটতেই এবার খোঁজ মিলল জঞ্জালবাড়ির। কী নেই সে বাড়িতে! নোংরা জামাকাপড়, রাস্তার ইট, পাথর, ছেঁড়া জুতো, পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বোতল খেলনা- সব! এমনকি ঘরের ভেতরের সেই আবর্জনার স্তূপে পাওয়া গেছে মরা কুকুর-বেড়ালও!
গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় মধ্য কলকাতার গলফগ্রিন এলাকায় ঝাঁ-চকচকে একটি ফ্ল্যাটে জঞ্জালের এই পাহাড় পাওয়ার পর রীতিমতো হৈচৈ পড়ে গেছে এলাকায়। এর মধ্যে এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, আবর্জনার স্তূপে পাওয়া গেছে মানুষের হাড়সদৃশ বস্তু।
কলকাতার লালবাজার পুলিশ জানায়, গলফগ্রিনের ওই ফ্ল্যাটে সপরিবারে থাকতেন নীহাররঞ্জন সাহা নামের এক ব্যক্তি। তাঁর একমাত্র ছেলে সন্দীপ সাহা। ২০০৮ সাল থেকে নীহারবাবু লক্ষ করেন, ছেলে রাস্তায় যা পাচ্ছে তাই তুলে নিয়ে আসছে ঘরে। অনেকবার বারণ করেও ফল হয়নি। পাড়ার ডাস্টবিনের পচাগলা খাবার থেকে শুরু করে জুতা- প্লাস্টিক যা পাচ্ছে তাই এনে তুলছে ঘরে। ছেলের এই কাণ্ড সহ্য করতে না পেরে অগত্যা আলাদা ফ্ল্যাটে থাকার ব্যবস্থা করেন নীহার সাহা।
জানা গেছে, সন্দীপের এই কাণ্ডে ওই এলাকার অন্য বাসিন্দারাও অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। বিষয়টি বারবার সন্দীপের মা অনিতা সাহাকে জানিয়েও কোনো ফল মেলেনি বলে অভিযোগ তাঁদের। তবে বিষয়টি পুলিশে জানালে ওই পরিবারের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে- এই ভেবে প্রতিবেশীরা এত দিন চুপচাপ ছিল।
কিন্তু সম্প্রতি কলকাতার রবিনসন স্ট্রিটে কঙ্কাল পাওয়ার ঘটনায় হৈচৈ পড়ে যায় গোটা শহরে। আতঙ্কে শেষমেশ পুলিশে বিষয়টি জানায় প্রতিবেশীরা। খবর দেওয়া হয় স্থানীয় কলকাতা পৌরসভার ৯৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তন্ময় দাশগুপ্তকেও। কাউন্সিলর বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েই ঘটনাস্থলে গিয়ে আবর্জনার স্তূপ দেখতে পাই। ফ্ল্যাটের ভিতর দুর্গন্ধে টেকা যাচ্ছিল না। পরে পুলিশ আসে।’ তবে পুলিশ এসে জঞ্জাল ঘেঁটে কোনো কঙ্কাল উদ্ধার করতে পারেনি বলে জানিয়েছেন তিনি। আর এতেই আপাতত স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে স্থানীয় বাসিন্দারা।
কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, গতকাল বাড়িতে সন্দীপকে পাওয়া জায়নি। সে বাড়ি এলে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হবে। কাউন্সিলর তন্ময় দাশগুপ্ত জানিয়েছেন, ওই ফ্ল্যাট থেকে আবর্জনা সরিয়ে ফেলার ব্যবস্থা করা হয়েছে।