পূর্ণাঙ্গ রায়ের পর মুজাহিদের ফাঁসির কার্যক্রম
পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপি পাওয়ার পর সরকার আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের ফাঁসির কার্যক্রম শুরু করতে পারবে বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তিনি বলেন, তবে রায় রিভিউয়ের (পুনর্বিবেচনা) আবেদন করলে এ কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। আজ মঙ্গলবার সকালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের দায়ে মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এর আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেন।
রায় ঘোষণার পর আদালত থেকে বেরিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আপিল বিভাগে এই প্রথম কোনো যুদ্ধাপরাধীর বিরুদ্ধে সর্বসম্মতিক্রমে রায় দেওয়া হলো। রায়ে আমরা সন্তোষ প্রকাশ করছি।’
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় ডা. আবদুল আলীম, ডা. ফজলে উদ্দীন, সাংবাদিক সিরাজউদ্দিন হোসেন, সুরকার আলতাফ মাহমুদ, জহিরউদ্দিন জালাল, বদি, জাহানারা ইমামের ছেলে রুমি, জুয়েল প্রমুখকে মুজাহিদের পরামর্শে হত্যা করা হয়।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, মুজাহিদের বিরুদ্ধে আনা বুদ্ধিজীবী হত্যার ৬ নম্বর অভিযোগে তাঁর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ এবং ফরিদপুরে বকচরে গণহত্যায় ৭ নম্বর অভিযোগে তাঁকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তিনি বলেন, হিটলার বাহিনী যে হিংস্রতা করেছে, মুজাহিদের নেতৃত্বে আলবদর বাহিনীর হিংস্রতায় কোনো পার্থক্য ছিল না। স্বাধীনতা যুদ্ধ যখন সমাপ্তির পথে, তখন পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী পাকিস্তানি বাহিনীর যোগসাজশে মোহাম্মদপুরে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়।
হত্যাকাণ্ডে মুজাহিদ সরাসরি জড়িত ছিলেন কি না—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মাহবুবে আলম বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বিভিন্ন বক্তৃতায় হিন্দু ও বুদ্ধিজীবীদের হত্যার জন্য বিভিন্ন ধরনের উসকানিমূলক বক্তব্য দিতেন।
এই বক্তব্যগুলো তৎকালীন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে এবং পত্রিকার বিভিন্ন ক্যাপশনে তাঁকে চিহ্নিত করা হয়। পৃথিবীর কোনো দেশে এমন নজির নেই যে মানুষ নিজের দেশের মানুষকে এমনভাবে হত্যা করেছে। বাঙালি জাতীয়তাবাদে যাঁরা বিশ্বাস করেন, তাঁরা এই রায়ে স্বস্তি পাবেন।