টিভিতে সিনেমা দেখার প্রতিযোগিতা চলছে : ওমর সানি
‘এখন আর সিনেমা হলের জন্য সিনেমা বানানো হচ্ছে না। চারিদিকে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে কীভাবে নিজের বাসায় বসে বউ-বাচ্চা নিয়ে আলাপ করতে করতে টিভিতে সিনেমা দেখা যায়। হলের ছবি না বানালে তো সেটা হলে চলবে না।
যারা ছবি বানাচ্ছে, যে ধরনের গল্প নিয়ে ছবি বানাচ্ছে, যাদের নিয়ে বানাচ্ছে, তথ্যপ্রযুক্তির দোহাই দিয়ে যে অ্যারেঞ্জমেন্টে ছবি বানাচ্ছে, একটু লক্ষ করলেই দেখা যাবে যে সেটা আমাদের ছবি না। প্রশ্ন হচ্ছে এটা তাহলে কাদের ছবি?
কোথায় চালাবে এই ছবি?’ বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের বর্তমান অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন করার পর অভিনেতা ওমর সানি উল্টো প্রশ্ন করেন এনটিভি অনলাইনকে।
জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ওমর সানি আরো বলেন, ‘আমরা যখন ছবিতে কাজ শুরু করি, তখন একটি ছবিতে কাজ করলেই নায়ক-নায়িকাকে দর্শক চিনতে পারত। অথচ এখন একের পর এক ছবি মুক্তি পেলেও কেউ কাউকে চিনে না।
কয়েকদিন আগে, আমি একটি টিমের সাথে রাজশাহী যাচ্ছিলাম ছবির প্রচারণায়। সেখানে আমার ১৫ জায়গাতে থামতে হয়েছে। এর মধ্যে ১২ জায়গাতে আমাকে সাধারণ মানুষ প্রশ্ন করেছে, ভাই এই নায়কের সাথে ওই নায়িকাটা কে?
বেশ কয়েকটা ছবি রিলিজ হওয়ার পরও নায়িকাকে কেউ চিনে না। তারপরও তাঁকে নিয়ে একের পর এক ছবি বানাচ্ছে।’
কেন ভালো ছবি হচ্ছে না, এমন প্রশ্নের জবাবে সানি বলেন, ‘মাদ্রাজের সবাই তরকারিতে তেঁতুল খায়। আমার মনে হয় না, বাংলাদেশের মানুষ সব তরকারিতে তেঁতুল খেতে পছন্দ করবে। তেমনি গল্পের বেলায় ভাবতে হবে, যে গল্পটা নিয়ে আমরা কাজ করছি, সেটি আমাদের দেশের গল্প কি না। যে ফাইট করছি সেটা আমাদের ফাইট কি না। যেভাবে যে পোশাক পরে নাচ করছি, সেটা আমাদের নাচ কি না। যে গানটির সঙ্গে নাচ করছি সেটা চলচ্চিত্রের গান হয়েছে কি না। যদি আমাদের না হয়ে থাকে, তাহলে আমাদের দর্শক কেন হলে যাবে? তারা তো জানে, এ ছবি কে বানিয়েছে আর কয়দিন পরে তারা টিভিতে দেখতে পাবে। কেন দর্শক হলে এসে সময় নষ্ট করবে?’
অনেক ক্ষোভ প্রকাশ করে সানি যোগ করেন, ‘যারা ছবি বানাতে চান আগে জিনিসটা বুঝুন, দর্শকদের বুঝুন, বাংলাদেশের মানুষকে বুঝুন, তারপর চলচ্চিত্রে কাজ করেন। আজকে কয়েকটা নাটক বানিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করলেই সেটা চলচ্চিত্র হবে না। আর বড় নাটক বানিয়ে এটাকে সিনেমা বলে চালালে, একসময় এর জন্য আপনাদের জনগণের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।’
যৌথ প্রযোজনার ছবিতে বাংলাদেশের নায়করা স্থান পাচ্ছে না কেন? এর জবাবে ওমর সানি বলেন, ‘ফেল করবে জেনেও, অনেক মানুষ পরীক্ষা দেয়। ভারতের নায়করা বাংলাদেশের দর্শকদের গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। এটা প্রমাণিত।
কলকাতায় মিঠুন চক্রবর্তীর জীবনে কোনো ফ্লপ ছবি নেই। কিন্তু বাংলাদেশে একটি ছবি করেছিলেন যেটা টাকা তুলতে পারেনি। কারণ বাংলাদেশের মানুষ যখন হলে ঢোকে, তখন সে নিজেদেরকেই দেখতে চায়।’