নায়করাজের অবস্থা ভালো নয়
রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালের পক্ষ থেকে আজ ২৯ জুন সোমবার দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে নায়করাজ রাজ্জাকের চিকিৎসার খবর জানাতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এখানে ডাক্তার শাগুফা আনোয়ার (চিফ অব কমিউনিকেশন অ্যান্ড বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ইউনাইটেড হসপিটাল লিমিটেড) এক লিখিত বক্তব্যের জানান, ‘নায়করাজ গত ২৬ জুন সন্ধ্যায় বুকের ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। সে সময় তিনি প্রচণ্ড ঘামছিলেন। বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. আদনান ইউসুফের তত্ত্বাবধানে তাঁর চিকিৎসা করা হয় এবং নিবিড় পরিচর্যার জন্য জেনারেল আইসিউতে নেওয়া হয়। ওই সময় তাঁর নাড়ির স্পন্দন ছিল মিনিটে ১৩০ ও রক্তচাপ ছিল ১৪০/৯০। শব্দযুক্ত শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে ওনার বুকে ওঠানামা হচ্ছিল।’
সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, বর্ষীয়ান এই অভিনেতার দ্রুত প্রযোজনীয় চিকিৎসা দেওয়ার পর ধীরে ধীরে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়। এবং রক্তে কার্বন ডাই-অক্সাইডের মাত্রা কমে যায়। তবে ২৭ জুন তাঁর আবার রক্তে কার্বন ডাই-অক্সাইডের মাত্রা বাড়তে থাকে, যা বাই-প্যাপ মেশিনের সহায়তা নেওয়ার পরেও উন্নত হচ্ছিল না এবং একপর্যায়ে ওনার শ্বাসের স্বল্পতা ও মারাত্মক শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। এ সময় রাজ্জাক ঘুমিয়ে পড়ছিলেন এবং তাঁর রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কমে আসছিল। তার রক্তে কার্বন ডাই-অক্সাইডের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছিল বিধায় তাঁকে ২৭ জুন রাত ১১টা ৩০ মিনিটে ভেন্টিলেটরের মাধ্যমে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের আওতায় আনা হয়। গতকাল ২৮ জুন বক্ষব্যাধি, হ্দরোগ, মেডিসিন ও কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞদের উপস্থিতিতে মেডিকেল বোর্ড গঠন করে তাঁর সার্বিক চিকিৎসা ও অবস্থার মূল্যায়ন করা হয় এবং বর্তমান চিকিৎসাই চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়, যাতে ধীরে ধীরে অবস্থার উন্নতির মাধ্যমে স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস ফিরিয়ে আনা যায়।
বর্তমানে নায়করাজ মানসিকভাবে সচেতন আছেন এবং ওষুধের মাধ্যমে তাঁর রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে। রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা এবং রক্তচাপের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে। তবে রাজ্জাকের রোগের জটিলতার কারণে তাঁকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
ডাক্তার শাগুফা আনোয়ার আরো বলেন, ‘নায়করাজের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে আসলে সিগারেটের কারণে ওনার এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের এই বক্তব্য দুপুর ৩টা পর্যন্ত। এর পরে যে কোনো সময় তাঁর ভালো অথবা খারাপ হতে পারে।’
৭২ বছর বয়সী বাংলা চলচ্চিত্রের সোনালি যুগের নায়ক অনেক দিন ধরে নিউমোনিয়ায় ভুগছিলেন। গত বছর মার্চে তাঁর ছেলে বাপ্পারাজ পরিচালিত ‘কার্তুজ’ সিনেমার সেটে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। কিছুদিন হাসপাতালে থেকে তিনি বাসায় আসেন আবার এক সপ্তাহের মাথায় তাঁকে স্কয়ারে ভর্তি করতে হয়েছিল। এক বছর ধরে ডাক্তারের পরামর্শে তিনি বিশ্রামে ছিলেন। প্রায় এক বছর তিনি অভিনয় থেকেও দূরে আছেন।