কথা বলছেন নায়করাজ
প্রতিদিনের মতো আইসিইউর সামনে বসে আছি। তখন দুপুর প্রায় ২টা। এরই মধ্যে একজন লোক আমার দিকে এগিয়ে এসে বললেন, আব্বা আমাকে ডাকছেন। একটু টেনশন নিয়ে এগিয়ে গিয়ে দেখি, আব্বা বসে আছেন। মনে হলো যেন এখানেই দুনিয়ার যত শান্তি। উনি আমার দিকে তাকালেন, দেখি মুখে মৃদু হাসি। আমি আব্বাকে স্বাগত জানিয়ে কাছে গেলাম। আব্বা তাঁর হাতটা আমার দিকে বাড়িয়ে দিলেন। এই সাত দিনের অপেক্ষা সার্থক। মনে হলো, আমার কাছের বন্ধু, আমার পৃথিবী আমার কাছে ফিরে এসেছে।’ বাবাকে নিয়ে এভাবেই আবেগের কথা বলছিলেন নায়করাজের ছোট ছেলে সম্রাট।
নায়করাজ রাজ্জাক এখন কথাও বলতে পারছেন। ১ জুলাই দুপুর ২টা থেকেই স্বাভাবিকভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারছেন তিনি। গতকাল দুপুরে আরো ভালো হয়েছে শারীরিক অবস্থা। রাজ্জাকের শারীরিক এই অবস্থার কথা জানিয়েছেন ইউনাইটেড হাসপাতালের মুখপাত্র ডা. শাগুফা আনোয়ার। তিনি বলেন, ‘এটা একটা চলমান প্রক্রিয়ার অংশ। আমরা ওনাকে স্বাভাবিক উপায়ে ফিরিয়ে আনতে গত শুক্রবার থেকেই চেষ্টা করছি। আমরা সব সময়ই আশাবাদী ছিলাম। কারণ, তিনি এর আগে যখন আমাদের এখানে ভর্তি হয়েছিলেন, তখন ছিলেন ১০ দিন। সে ক্ষেত্রে আমরা এবার ওনাকে আরো আগেই সুস্থ অবস্থায় দেখতে পাব বলে আশা করছি।’
ডা. শাগুফা আনোয়ার আরো বলেন, ‘কোনো রোগ একদিনে ভালো হয় না। চিকিৎসার ফলে একটা ধারাবাহিকতা মেনে মানুষ সুস্থ হয়। তিনিও সুস্থ হচ্ছেন। এর আগেও তিনি আমাদের হাসপাতালে এসেছেন এবং চিকিৎসা নিয়েছেন। আমরা আশা করছি, খুব তাড়াতাড়ি তিনি ভালো হয়ে উঠবেন এবং বাড়ি ফিরে যাবেন।’
নায়করাজের ছোট ছেলে সম্রাট বলেন, ‘আল্লাহর অশেষ রহমতে আব্বা এখন ভালো আছেন। ভেন্টিলেশন ছাড়াই এখন তিনি নিশ্বাস নিচ্ছেন। তিনি আমার সঙ্গে কথাও বলেছেন। সবার খোঁজখবর নিয়েছেন। আপনারা দোয়া করবেন, আব্বাকে যেন তাড়াতাড়ি বাড়ি নিয়ে যেতে পারি।’
নায়করাজ রাজ্জাক গত ২৬ জুন সন্ধ্যায় বুকে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। ৭২ বছর বয়সী বাংলা চলচ্চিত্রের এই সোনালি যুগের নায়ক অনেক দিন ধরে নিউমোনিয়ায় ভুগছিলেন। গত বছর মার্চে তাঁর ছেলে বাপ্পারাজ পরিচালিত ‘কার্তুজ’ সিনেমার সেটে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। কিছুদিন হাসপাতালে থেকে তিনি বাসায় আসেন, আবার এক সপ্তাহের মাথায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। এক বছর ধরে ডাক্তারের পরামর্শে তিনি বিশ্রামে ছিলেন। এ সময় তিনি অভিনয় থেকেও দূরে আছেন।