‘উচিত রায়, সিরাজকে ধর ধর’ বলে মানুষের ধাওয়া
ফেনীতে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে আদালত চত্বরে আসা সাধারণ মানুষ বলেছে, উচিত রায় হয়েছে।
ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ আজ বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে প্রধান আসামি অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাসহ ১৬ খুনির সবার ফাঁসির আদেশ ও প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করেন। এই টাকা নুসরাতের পরিবারকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সব আসামির উপস্থিতিতে এ রায় দেন বিচারক।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন নুসরাতের পরিবার ও তাঁর আইনজীবী। অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী আপিল করার কথা বলেছেন।
রায় ঘোষণা শেষে পুলিশ আদালতের তিনতলার এজলাস থেকে প্রধান আসামি সিরাজ-উদ-দৌলাকে কারাগারে নেওয়ার জন্য প্রিজনভ্যানে ওঠায়। গাড়িতে ওঠানোর আগে উপস্থিত কয়েকশ জনতা ‘ধর, ধর’ বলে চিৎকার করতে থাকে। এ সময় অনেকে সিরাজের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর চেয়ে স্লোগান দিতে থাকে।
এ বিষয়ে আবুল কালাম নামের একজন সাধারণ নাগরিক এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘উচিত রায় হয়েছে। সিরাজ ফেনীর বদনাম করেছে। আলেম সমাজকে হেয় করেছে।’
আবদুস সালাম নামের একজন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এ রায় দরকার ছিল। মাদ্রাসার মতো একটি দ্বীনি প্রতিষ্ঠানে বসে সিরাজ এসব অপকর্ম করেছে। এখান থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত।’
নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলায় ফাঁসির আদেশ পাওয়া ১৬ জন হলেন—প্রধান আসামি সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এস এম সিরাজ-উদ-দৌলা, দুই নম্বর আসামি ফেনী কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ও অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা মুক্তি পরিষদ আন্দোলনের আহ্বায়ক মো. নূর উদ্দিন, তিন নম্বর আসামি মাদ্রাসার ফাজিলের ছাত্র শাহাদাত হোসেন শামীম, চার নম্বর আসামি সোনাগাজী পৌর আওয়ামী লীগের সদ্য বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, পাঁচ নম্বর আসামি ছাত্রলীগকর্মী ও মাদ্রাসার ফাজিল বিভাগের ছাত্র মো. জোবায়ের, ছয় নম্বর আসামি চরচান্দিয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি ও মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী জাবেদ হোসেন, সাত নম্বর আসামি মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষক ও ফাজিল দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র হাফেজ আবদুল কাদের এবং আট নম্বর আসামি মাদ্রাসার ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আফছার উদ্দিন।
ক্রমানুসারে অন্য আসামিরা হলেন মাদ্রাসার ফাজিল প্রথম বর্ষ ও ফেনী পলিটেকনিক কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র আবদুর রহিম ওরফে শরীফ, অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা মুক্তি পরিষদ আন্দোলনের সদস্য ও ছাত্রলীগকর্মী মো. শামীম, অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা মুক্তি পরিষদ আন্দোলনের সদস্য ও ফেনী কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র এমরান হোসেন মামুন, মাদ্রাসা শাখা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ইফতেখার উদ্দিন রানা, অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা মুক্তি পরিষদ আন্দোলনের সদস্য ও ছাত্রদলকর্মী হিসেবে পরিচিত মহিউদ্দিন শাকিল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. রুহুল আমিন, মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী উম্মে সুলতানা পপি ও মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী কামরুন নাহার মণি।