রাজন হত্যা : আসামি বাদল পুলিশি হেফাজতে
সিলেটের শিশু শেখ সামিউল আলম রাজন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার তাজ উদ্দিন আহমেদ বাদলকে পাঁচদিন পুলিশি হেফাজতে (রিমান্ড) দিয়েছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটার দিকে সিলেট মহানগর হাকিম আদালত-২-এর বিচারক সাহেদুল করিম এ হেফাজত মঞ্জুর করেন।
এর আগে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিলেট মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক সুরঞ্জিত তালুকদার আসামি বাদলকে ১০ দিন হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানান। শুনানি শেষে বিচারক পাঁচদিনের হেফাজত মঞ্জুর করেন।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. রহমত উল্লাহ হেফাজতে নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে সিলেট সদর উপজেলার শেখপাড়া থেকে বাদলের বাবা ও এলাকাবাসী পুলিশের হাতে তুলে দেন তাঁকে। পরে রাজন হত্যা মামলায় পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার দেখায়।
রহমত উল্লাহ আরো জানান, এই মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া আরেক আসামি আলী হোসেন একই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিচ্ছে।
আলোচিত রাজন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এ পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে মুহিত আলম, ময়না মিয়া, দুলাল আহমদ, নূর আহমদ এবং প্রত্যক্ষদর্শী আজমত ও ফিরোজ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
গত ৮ জুলাই সিলেট শহরতলির কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ডে প্রকাশ্যে শিশু রাজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ সময় নির্যাতনের ভিডিওচিত্রও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেওয়া হয়। লাশ গুম করার সময় স্থানীয় লোকজন হাতেনাতে আটক করেন সিলেট সদর উপজেলার শেখপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মুহিত আলমকে। পরে মুহিতকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এ ঘটনায় মুহিত, তাঁর ভাই কামরুল ইসলাম, আলী হায়দার ও স্থানীয় চৌকিদার ময়না মিয়া লালকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন রাজনের বাবা।
গত ১৩ জুলাই পুলিশ মুহিতের স্ত্রী লিপি বেগম ও আত্মীয় ইসমাইল হোসেন আবলুসকে পৃথক স্থান থেকে আটক করে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় পরে লিপিকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। তিন নম্বর আসামি কামরুল সৌদি আরবে পালিয়ে গেলে ১৩ জুলাই প্রবাসী বাংলাদেশিদের সহযোগিতায় তাঁকে আটক করা হয়। পরে তাঁকে সেখানকার পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এ ছাড়া রাজন হত্যাকাণ্ডে উৎসাহ দেওয়ার অভিযোগে দুই প্রত্যক্ষদর্শী আজমত উল্লাহ ও ফিরোজ আলীকে ১৪ জুলাই হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ওই দিন রাত ১০টার দিকে সিলেট শহরতলির টুকেরবাজার এলাকা থেকে মামলার এজাহারভুক্ত আসামি স্থানীয় চৌকিদার ময়না মিয়া লালকে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পরের দিন ১৫ জুলাই দুপুরে শহরতলির শেখপাড়া থেকে এলাকাবাসী ও পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতায় আরেক আসামি দুলালকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলার শুরুতে দুলালের নাম এজাহারে না থাকলেও রাজনকে পিটিয়ে হত্যার ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করে এজাহারে নাম অন্তর্ভুক্ত করে পুলিশ। রাজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা মুঠোফোনে ভিডিও ধারণকারী নূর আহমেদকে ১৫ জুলাই সন্ধ্যায় শহরতলির জাঙ্গাইল গ্রামের স্বজনরা পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পরের দিন ১৬ জুলাই সকালে আসামি আলী হায়দারকে পুলিশের হাতে তুলে দেয় সদর উপজেলার শেখপাড়া গ্রামের লোকজন।