হবিগঞ্জের মেয়র গউসের জামিন আবেদন খারিজ
সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলার আসামি হবিগঞ্জ পৌরসভার বরখাস্ত হওয়া মেয়র বিএনপি নেতা জি কে গউসের জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ সোমবার আসামির করা জামিন আবেদনের ওপর শুনানি শেষে বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান ও বিচারপতি আবদুর রবের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আসামিপক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন। তাঁকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট মাসুদ রানা। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
এ বিষয়ে গউসের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাসুদ রানা এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘মামলার শুনানিতে আমরা বলেছি কিবরিয়া হত্যা মামলায় বর্তমান সরকারের আমলে প্রথম তিনবার অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। ওই তিনবারের অভিযোগপত্রে গউসের নাম ছিল না। পরে চতুর্থবারের দেওয়া অভিযোগপত্রে তাঁর নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ ছাড়া এ ঘটনায় গ্রেপ্তার অপর চারজন আসামি জয়নাল আবেদীন সেলিম, জমির আলী, মো. তাজুল ইসলাম ও মো. সাহেদ আলীর স্বীকারোক্তি নেওয়া হয়। ওই স্বীকারোক্তিতে তাঁরা গউসের নাম বলেননি। শুধু ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আসামি মুফতি হান্নান স্বীকারোক্তিতে বলেছেন, সিলেটের কাজ স্থানীয়রা করবে। কিন্তু তিনি কারো নাম বলেননি। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এ মামলায় গউসকে জড়ানো হয়েছে। শারীরিকভাবেও তিনি অনেক অসুস্থ। কারাগারেও তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে জখম করা হয়।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘শুনানিকালে আমরা বলেছি কিবরিয়া হত্যা মামলা একটি স্পর্শকাতর মামলা। আসামিকে জামিন দেওয়া হলে মামলার কাজে বাধাগ্রস্ত হবে। দীর্ঘদিনেও এ মামলার বিচার হয়নি। তাই আসামিকে জামিন দেওয়া যাবে না। আদালত আবেদন গ্রহণ করে জামিন আবেদন খারিজ করেছেন।’
এর আগে গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর জি কে গউস হবিগঞ্জের জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আবেদন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠান আদালত। পরে তিনি হাইকোর্টে জামিন আবেদন করলে আদালত শুনানি শেষে জামিন আবেদন খারিজ করে দেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জের বৈদ্যেরবাজারে জনসভায় গ্রেনেড হামলায় আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়াসহ পাঁচজন নিহত হন। গ্রেনেড হামলার এ ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সংসদ সদস্য আবদুল মজিদ খান বাদী হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা করেন।
তিন দফা তদন্তের পর এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সিলেট অঞ্চলের সহকারী পুলিশ সুপার মেহেরন নেছা পারুল ২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র বিএনপি নেতা আরিফুল হক, জি কে গউছ এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীসহ ১১ জনের নাম যোগ করে মোট ৩৫ জনের বিরুদ্ধে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেন। এরপর আরিফুল ও গউস আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে বিচারক তা নাকচ করে তাঁদের কারাগারে পাঠান। সরকার তাঁদের মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে। গত জুন মাসে হবিগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য সিলেটে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।