সুমাইয়ার শরীরে আঘাতের চিহ্ন
মাদারীপুরে দুই স্কুলছাত্রী নিহতের ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেলে সদর থানায় সাতজনকে আসামি করে এ মামলা দায়ের করেন নিহত সুমাইয়ার বাবা বিল্লাল শিকদার। এ ছাড়া এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ আরো দুজনকে আটক করেছে। এ নিয়ে এ ঘটনায় চারজনকে আটক করা হলো।
urgentPhoto এদিকে দুই কিশোরীর ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। চিকিৎসক জানিয়েছে, এদের মধ্যে সুমাইয়ার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে ধর্ষণের কোনো আলামত এখনো পাওয়া যায়নি।
এ ছাড়া পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ঘটনা তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটির প্রধান করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উত্তম কুমার পালকে।
গতকাল বৃহস্পতিবার মাদারীপুরে দুই স্কুলছাত্রীকে অপহরণের পর নির্যাতন করে তাদের মুখে বিষ ঢেলে হত্যা করা হয় বলে তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়। এরা হলো মস্তফাপুর গ্রামের বিল্লাল শিকদারের মেয়ে সুমাইয়া (১৬) এবং একই গ্রামের হাবিব খাঁর মেয়ে হ্যাপি (১৫)। তারা দুজনই মস্তফাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। পুলিশের ধারণা, প্রেমঘটিত ব্যাপার থেকে এ ঘটনা ঘটতে পারে।
ঘটনার পর পরই পুলিশ হাসপাতাল থেকে একই গ্রামের দুই কিশোর রকিব (১৬) ও শিপনকে (১৬) আটক করে।
এরপর আজ শুক্রবার সকালে এ ঘটনায় সন্দেহভাজন মস্তফাপুর গ্রামের সৈকত খলিফার ছেলে রানার মা সালমা বেগম এবং এ ঘটনায় সন্দেহভাজন মেহেদির মা রহিমা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল মোর্শেদ। তিনি জানান, ঘটনার পর থেকেই মেহেদি ও রানাসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্য পলাতক।
সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফায়েকুজ্জামান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘ধারণা করা হচ্ছে একই গ্রামের রানা নামে এক কিশোরের সঙ্গে দুই স্কুলছাত্রী সুমাইয়া ও হ্যাপির প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এরই জের ধরে এ ঘটনা ঘটতে পারে।
‘বিষয়টি প্রাথমিকভাবে আমাদের কাছে ত্রিভুজ প্রেমের ঘটনা বলে মনে হচ্ছে। সুমাইয়া ও হ্যাপিকে হাসপাতালে নিয়ে আসা দুই যুবকই হচ্ছে মেহেদি ও রানা। পরে তারা হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়।’ যোগ করেন এসআই।
গতকাল বৃহস্পতিবার আটক শিপন ও রাকিব জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, মেহেদি ও রানা নিহত দুই স্কুলছাত্রীকে ভ্যানে করে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে দেখে তারা হাসপাতালে আসে। সেখান থেকেই তাদের আটক করা হয়।
এদিকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) শফিকুল ইসলাম রাজীব জানান, শুক্রবার দুপুরে নিহতদের ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে। নিহত সুমাইয়ার শরীরের অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। হ্যাপির শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের পর এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানা যাবে।
তবে দুই কিশোরীকে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সরোয়ার হোসেন। তিনি এনটিভি অনলাইনকে জানান, তবু এ ঘটনার আলামত সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে। ভিসেরা রিপোর্ট পাওয়ার পর বিস্তারিত জানা যাবে। প্রেমের কারণেই এ ঘটনা ঘটে বলে ধারণা করছেন এসপি।