রাজন হত্যা : কামরুলসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র
সিলেটের শিশু শেখ সামিউল আলম রাজন হত্যা মামলায় কামরুলসহ ১৩ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। আজ রোববার বিকেলে চাঞ্চল্যকর এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) ডিবির পরিদর্শক সুরঞ্জিত তালুকদার মহানগর মুখ্য হাকিম ২-এর বিচারক ফারহানা ইয়াসমীনের আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। হত্যাকাণ্ডের এক মাস আট দিনের মাথায় এ মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হলো।
এসএমপির মুখপাত্র এবং অতিরিক্ত উপকমিশনার রহমত উল্লাহ এনটিভি অনলাইনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, অভিযোগপত্রে ১৩ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশে ১২ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন।
প্রধান আসামি কামরুল সৌদি আরবে আটক রয়েছেন। অভিযোগপত্রে তাঁকে পলাতক দেখানো হয়েছে। পাশাপাশি অভিযুক্ত পাভেল ও শামীমকেও পলাতক দেখানো হয়েছে। মোট তিনজনকে পলাতক দেখানো হয়েছে।
এ মামলায় অভিযুক্ত অন্যরা হচ্ছেন আজমত উল্লাহ, মুহিত আলম, নূর আহম্মদ, আলী হোসেন, রুহুল আমীন, চৌকিদার ময়না মিয়া, দুলাল আহমদ, তাজ উদ্দিন বাদল, ফিরোজ মিয়া ও আয়াজ আলী।
এসএমপির মুখপাত্র আরো জানান, কারাগারে আটক ১২ জনের মধ্যে ১০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। কামরুলের ভাবি লিপি বেগম ও তাঁর ভাই ইসমাইল হোসেন আবলুসের বিরুদ্ধে কোনো দোষ না পাওয়ায় তদন্ত কর্মকর্তা তাদের অভিযোগপত্র থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।
গত ৮ জুলাই সিলেট শহরতলির কুমারগাঁওয়ে চুরির অপবাদ দিয়ে শিশু রাজনকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ সময় মুঠোফোনে নির্যাতনের ভিডিওচিত্রও ধারণ করা হয়।
রাজনের লাশ গুম করার সময় মুহিত আলম নামের একজনকে হাতেনাতে আটক করা হয়। এ ঘটনায় রাজনের বাবা হত্যা মামলা করতে চাইলে প্রথম তিনদিন পুলিশ ও স্থানীয় দালাল চক্র মামলা করতে বাধা দেয়। পরে ইন্টারনেটে রাজন হত্যার নির্যাতনের ছবি ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। রাজনের বাবার মামলা নেয় পুলিশ। ততক্ষণে রাজনের অন্যতম নির্যাতনকারী কামরুল পালিয়ে সৌদি আরব চলে যান। পরে সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিদের সহায়তায় তাঁকে আটক করা হয়।
এরপর রাজন হত্যা মামলায় একে একে ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এঁদের মধ্যে আটজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
পাশাপাশি রাজন হত্যাকাণ্ডে মামলা দায়েরে বিলম্ব ও অন্যতম আসামি বিদেশে পালিয়ে যাওয়ায় সহায়তা করার প্রমাণ পাওয়ায় তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এঁরা হলেন জালালাবাদ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আলমগীর হোসেন, উপপরিদর্শক (এসআই) জাকির হোসেন ও আমিনুল ইসলাম।