বিচারকাজ শেষ হয়নি ১১ বছরেও
এগারো বছর পার হয়ে গেছে; কিন্তু শেষ হয়নি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচারকাজ।
urgentPhoto
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের জনসভায় সে সময়কার বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। হামলায় আওয়ামী মহিলা লীগের সভানেত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ নেতাকর্মী নিহত হন। আহত হন শতাধিক।
এই গ্রেনেড হামলার ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা করা হয়। পরে মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) স্থানান্তর হয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আবদুর রশীদ হয়ে মুন্সি আতিকুর রহমানের কাছে যায়।
অভিযোগ ওঠে, মুন্সি আতিক ও আবদুর রশীদ মামলাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য জজ মিয়া নাটক সাজান; তাঁর কাছ থেকে মিথ্যা জবানবন্দি আদায় করেন। পরিবারকে প্রতি মাসে টাকা দেওয়ার কথাও বলেন। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) ও পুলিশের আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারপোল মামলার তদন্ত করে।
২০০৮ সালের ১১ জুন এ মামলার প্রথম অভিযোগপত্র জমা দেন সিআইডির এএসপি ফজলুল কবীর। এতে বিএনপি নেতা আবদুস সালাম পিন্টু, মাওলানা তাজউদ্দিনসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, মুফতি হান্নান ছিলেন ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী। তাঁদের লক্ষ্য ছিল, শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের হত্যা করা। এ ছাড়া ঘটনাকে ভিন্ন খাতে নিতে সে সময়ের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের ভূমিকা ছিল বলেও অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালের ৩ আগস্ট মামলাটির অধিকতর তদন্তের জন্য দায়িত্ব পান পুলিশের বিশেষ সুপার আবদুল কাহহার আকন্দ। পুনঃতদন্ত শেষে ২০১১ সালের ৩ জুলাই তিনি সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেন।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ রেজাউর রহমানের সহকারী আইনজীবী আকরাম উদ্দিন শ্যামল এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এ মামলার অভিযোগপত্রে মোট সাক্ষীসংখ্যা ৪৯১ জন। এ পর্যন্ত ১৭৬ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। আগামী ২৫ ও ২৬ আগস্ট এ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য আছে।’ তিনি আরো জানান, মামলাটি এখন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দীনের আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। মামলায় মোট আসামির সংখ্যা ৫২ জন। আসামিদের মধ্যে তারেক রহমানসহ ১৮ জন পলাতক।
এ ছাড়া খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লে. কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. আশরাফুল হুদা, শহিদুল হক ও খোদা বক্স চৌধুরী এবং মামলাটির তিন তদন্ত কর্মকর্তা সাবেক বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, সিআইডির সিনিয়র এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান, এএসপি আবদুর রশীদ ও তৎকালীন ওয়ার্ড কমিশনার আরিফুল ইসলামসহ আটজন জামিনে আছেন। অন্যদিকে সাবেক মন্ত্রী জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, হুজি নেতা মুফতি আবদুল হান্নান বাবর, পিন্টুসহ ২৬ আসামি কারাগারে আটক আছেন।