ফরিদপুরে করোনায় আক্রান্ত সন্দেহে ৩ জন স্বেচ্ছায় কোয়ারেন্টাইনে
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে ফরিদপুরের তিন ব্যক্তিকে পারিবারিক কোয়ারেন্টাইনে (রোগ সংক্রমণের আশঙ্কায় পৃথক করে রাখার বিশেষ ব্যবস্থা) রাখা হয়েছে। তাঁরা তিনজনই সম্প্রতি ইতালি থেকে ফিরেছেন। ফরিদপুরের স্বাস্থ্য বিভাগ এ তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছে, পরিস্থিতির অবনতি হলে ফরিদপুরে সরকারি উদ্যোগে পৃথক কোয়ারেন্টাইন সেন্টার খোলা হবে।
ফরিদপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. ছিদ্দিকুর রহমান জানান, গত ২ মার্চ শহরের ঝিলটুলীর বাসিন্দা তিন ভাই ইতালি থেকে দেশে রওনা হন। ৩ মার্চ তাঁরা দেশে ফেরেন। গত সোমবার রাতে বিষয়টি তাঁরা জানতে পারেন এবং পরদিন গতকাল মঙ্গলবার থেকে তাঁরা তাঁদের নিজেদের উদ্যোগেই বাসায় কোয়ারেন্টাইনে থাকার ব্যবস্থা নেন বলে ডা. সিদ্দিকুর রহমান জানান।
সিভিল সার্জন আরো জানান, ওই তিন ব্যক্তির পরিবার থেকে তাঁদের উদ্যোগেই স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাঁরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হননি এবং তাঁদের মাঝে করোনাভাইরাসের লক্ষণও পাওয়া যায়নি। তবে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে সতর্কতামূলক পর্যবেক্ষণের জন্যই তাঁরা তাঁদের বাসায় অন্যদের সঙ্গে মেলামেশা না করে পৃথক রয়েছেন।
সিভিল সার্জন ডা. ছিদ্দিকুর রহমান জানান, ওই তিন ব্যক্তিকে একটি কক্ষে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এবং একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে প্রতিরক্ষামূলক পোশাক পরে করে তাঁদের খাবার-দাবার ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে স্বাস্থ্য বিভাগ তাঁদের প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থার জন্য কোনো পোশাক, গ্লাভস কিংবা মাস্ক সরবরাহ করতে পারেনি। তাঁদের কাছে এখনো এসব মালামাল সরবরাহ করা হয়নি।
এদিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি পৃথক আইসোলেশন সেন্টার খোলা হয়েছে। আর জেনারেল হাসপাতালে পাঁচটি শয্যা তৈরি রাখা হয়েছে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য।
সূত্র জানায়, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জেলা শহর ছাড়াও উপজেলা পর্যায়েও কোয়ারেন্টাইন সেন্টার খোলার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। ফরিদপুরের সালথা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবন ও সদরের বক্ষব্যাধি হাসপাতালে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার চালু করা হতে পারে। এর বাইরে প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও কয়েকটি বেড পৃথক করে রাখা হবে বলে জানানো হয়েছে।
এদিকে গতকাল মঙ্গলবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ফরিদপুরে একজন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মিলেছে এবং তাঁকে ঢাকায় কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে নেওয়া হয়েছে বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি জেনে যোগাযোগ করা হলে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের একজন সেবিকা খবরটি নিশ্চিত করেন। তবে জেলা সিভিল সার্জন জানান, এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য তাঁর কাছে নেই। পরে ওই হাসপাতালে যোগাযোগ করা হলে বিষয়টি সঠিক নয় বলে কর্তৃপক্ষ জানায়।