কাল থেকে ভারত প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
করোনাভাইরাসের কারণে আগামীকাল শুক্রবার থেকে আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে পাসপোর্ট যাত্রীদের ভারতে প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ভারত সরকার। আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে বলে আদেশে বলা হয়। আজ বৃহস্পতিবার সকালে ভারতীয় ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ এক পত্রের মাধ্যমে এ আদেশ জারি করে।
যশোরের বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট পুলিশ ইমিগ্রেশনের ওসি আহসান হাবীব জানান, আজ সকালে ভারতীয় ইমিগ্রেশন পুলিশের পক্ষ থেকে এক নির্দেশনায় এ আদেশ জারি করা হয়। তবে আজ সকালে বাংলাদেশি বিপুলসংখ্যক পাসপোর্ট যাত্রী বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে গেছেন। যাঁরা ভারতে অবস্থান করছেন, তাঁরা যেকোনো সময় বাংলাদেশে ফিরে আসতে পারবেন।
আগামীকাল শুক্রবার থেকে কোনো পাসপোর্ট যাত্রীকে ভারতে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। যদিও বর্তমানে বেনাপোল বন্দর দিয়ে দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য চালু রয়েছে। প্রতিদিন ৫০০-৬০০ ট্রাক পণ্য বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি হয় এবং ৩০০ ট্রাক পণ্য ভারতে রপ্তানি হয়। বেনাপোল বন্দরে করোনাভাইরাস নিয়ে বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়। গত ২৫ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত এক লাখ ২০ হাজার পাসপোর্ট যাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। কারো দেহে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়নি।
এদিকে ভারতে করোনাভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়ায় আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত সব ধরনের পর্যটন ভিসা স্থগিত করেছে দেশটি। ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত সব পর্যটন ভিসা স্থগিত করা হয়েছে। তবে কূটনীতিক, জাতিসংঘ বা আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর কর্মকর্তারা এ পদক্ষেপের আওতাধীন নন। ভারত জানিয়েছে, আগামীকাল ১৩ মার্চ (ভারতীয় সময়) বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে ভিসার এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।
যেসব দেশে করোনা ছড়িয়ে পড়েছে, এর আগে সেসব দেশের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করা হয়েছিল। ভারতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত ৬৭ জন। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ইতালি থেকে ভারতে গেছেন।
ভারত সরকার জানিয়েছে, করোনায় আক্রান্ত দেশ চীন, ইতালি, ইরান, কোরিয়া প্রজাতন্ত্র, ফ্রান্স, স্পেন ও জার্মানি থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারির পর ভারতে আসা ব্যক্তিরা ১৪ দিন পর্যন্ত আলাদাভাবে (কোয়ারেন্টাইনে) থাকবেন।
সরকারি ঘোষণায় আরো বলা হয়, নির্দিষ্ট চেকপোস্টগুলোতে সীমান্ত দিয়ে ভূমিসংলগ্ন চলাচল কড়াকড়ি করে ব্যাপকভাবে পরীক্ষা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে আলাদাভাবে বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়েছে।
ভারতে এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৭ জন। এর মধ্যে মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, কেরালা ও কর্ণাটকে নতুন আক্রান্তের খবর মিলেছে।
ভারতের বিভিন্ন স্থানে করোনা আতঙ্কে স্কুল ও কলেজ বন্ধ রাখা হয়েছে। আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত সব স্কুল বন্ধ রেখেছে দিল্লি। স্কুল ও কলেজ বন্ধ কাশ্মীরেও। এ ছাড়া বার্ষিক সমাবর্তন স্থগিত রেখেছে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউটস অব ম্যানেজমেন্ট।
করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আগামীকাল শুক্রবার একদিনের বিশেষ বিধানসভা অধিবেশন ডেকেছে দিল্লি সরকার। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের নেতৃত্বে এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।