দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বড় সংকটে ইতালি, একদিনেই ১৮৯ জনের মৃত্যু
ইউরোপের দেশ ইতালিতে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ক্রমাগত বাড়ছে। সেইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। এরই মধ্যে দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ১৬ জনে। এর মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৮৯ জনের। এ দেশটিতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ১১৩ জনে। অন্যদিকে, সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন এক হাজার ২৫৮ জন। নেদারল্যান্ডসভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিএনও নিউজ এ খবর জানিয়েছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ইতালি। এমন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে কঠোর প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিয়েছে ইতালির সরকার। সেখানে পুরো দেশকেই রাখা হয়েছে কোয়ারেন্টাইনে। এ ছাড়া ওষুধ ও খাবারের দোকান বাদে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে সব ধরনের দোকানপাট। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
ইতালির প্রধানমন্ত্রী জিউসেপ কোঁতে জানিয়েছেন, পানশালা, রেস্তোরাঁ, হেয়ারড্রেসার এবং আপাতত অপ্রয়োজনীয় সংস্থাগুলোও বন্ধের আওতায় থাকবে। ইতালির প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও অর্থনীতির ক্ষেত্রে আঘাত আসায় এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী লুইজি দি মারিও আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘ইউরোপের মধ্যে ইতালিই সবার আগে এই জরুরি অবস্থা কাটিয়ে উঠতে পারবে।’
লুইজি দি মারিও আরো বলেন, ‘আমাদের চিকিৎসক ও নার্সরা যদি টানা ২৪ ঘণ্টা কাজ করে যেতে পারেন, আমরাও আমাদের বাসা থেকে বের হওয়া বাদ দিতে পারব। অসংখ্য মানুষ এই নিয়মকে সম্মান করছেন। কিন্তু যাঁরা করছেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে জরিমানাসহ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এদিকে চীনে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কমতে শুরু করায় দেশটির পক্ষ থেকে ইতালিতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ কর্মীদের পাঠানো হচ্ছে।
সংকট কাটাতে আড়াই হাজার কোটি ইউরো ব্যয় করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইতালির সরকার। সংকট কাটালেও দেশটি অর্থনৈতিক মন্দায় চলে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইতালি ছাড়াও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ধুঁকছে করোনাভাইরাসে। এর মধ্যে ফ্রান্সে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দুই হাজার ৮৭৬, স্পেনে তিন হাজার ৫৯, জার্মানিতে দুই হাজার ৫১২, সুইজারল্যান্ডে ৮৫৪, নরওয়েতে ৮০০, ডেনমার্কে ৬১৭, নেদারল্যান্ডসে ৬১৪, যুক্তরাজ্যে ৪৫৬ ও বেলজিয়ামে ৩১৪ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এরই মধ্যে করোনাভাইরাস বিশ্বব্যাপী মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে বলে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
এদিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে চার হাজার ৯৬৭ জনে। এ ছাড়া শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ৩৫ হাজার ৭৮১ জন বলে জানা গেছে। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ৬৮ হাজার ৩৪৬ জন।