বাংলাদেশের পোশাকখাতে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা দেবে : বার্নিকাট
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে সহায়তা দিতে যুক্তরাষ্ট্র অঙ্গীকারবদ্ধ বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির ঢাকাস্থ রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া স্টিফেনস ব্লুম বার্নিকাট। তিনি বলেন, এটা কোনো রাজনৈতিক বিষয় নয়। বাংলাদেশ যাতে এই খাতের চাহিদাগুলো পূরণ করতে পারে সে জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে আজ বুধবার সকালে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এসব কথা বলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফকালে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, তৈরি পোশাক খাতের উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকারের নেওয়া ব্যবস্থা সম্পর্কে আলোচনার সময় বার্নিকাট বলেন, মার্কিন ক্রেতারা বাংলাদেশের পোশাক খাতের শ্রমিকদের অবস্থা সম্পর্কে জানতে চায়।
রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অনন্য সাফল্যের প্রশংসা করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কেবল পোশাক খাতে নয়, কৃষিভিত্তিক শিল্প ও জাহাজ নির্মাণেও উন্নতি করছে বাংলাদেশ। তিনি নারীর ক্ষমতায়নেও বাংলাদেশের ব্যাপক অগ্রগতি লাভের প্রশংসা করেন।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকারী বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের দায়ে দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত পলাতক খুনি রাশেদ চৌধুরীর প্রত্যাবাসন সম্পর্কে রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট বলেন, এটি বিচার বিভাগীয় প্রক্রিয়ার আওতায় রয়েছে এবং তাঁর প্রত্যাবাসন নির্ভর করছে আদালতের সিদ্ধান্তের ওপর।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকার ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবস্থানের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বিশ্বব্যাপী শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের ভূমিকা এবং রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকারের যথাযথ পদক্ষেপেরও প্রশংসা করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ সম্পর্কে তাঁর বক্তব্য পুনরুল্লেখ করে বলেন, সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের কোনো ধর্ম ও দেশ নেই। তিনি বলেন, ‘আমি নিজে সন্ত্রাসবাদের শিকার এবং বাংলাদেশের জনগণকে এ জন্য অনেক ভুগতে হয়েছে। মানবজাতিকে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ থেকে রক্ষা করতেই হবে।’
গোলযোগপূর্ণ অঞ্চলগুলোতে শান্তি বজায় রাখার জন্য বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের অবদানের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এখন জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে সর্বাধিক সৈন্য প্রেরণকারী দেশ। বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা বিভিন্ন গোলযোগপূর্ণ অঞ্চলে শান্তি রক্ষার পাশাপাশি আর্থ-সামাজিক উন্নয়নেও কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী সারা বিশ্বে অস্ত্র উৎপাদন হ্রাসের ওপরও গুরুত্ব আরোপ করেন।
যোগাযোগের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের চাবিকাঠি হচ্ছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। এ প্রসঙ্গে তিনি সম্প্রতি বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপালের মধ্যে মোটরযান চলাচল চুক্তি স্বাক্ষর এবং বাংলাদেশ-চীন-ভারত ও মায়ানমারের মধ্যে অর্থনৈতিক করিডর প্রতিষ্ঠার চলমান উদ্যোগ এবং ভারতের সঙ্গে স্থলসীমান্ত চুক্তির কথা উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ, প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এবং বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন ডেভিড মিল এ সময় উপস্থিত ছিলেন।