মান নেই, চার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ
চারটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ আজ সোমবার জাতীয় সংসদে জানিয়েছেন, এ চার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার মান নিশ্চিত করতে পারেনি এবং সাময়িক অনুমতিপত্রের শর্ত পূরণেও ব্যর্থ হয়েছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয় সরকারি অনুমোদনহীন।
আজ সোমবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির সদস্য এম এ হান্নানের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী এসব তথ্য দেন।
শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, অবৈধ ঘোষিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হচ্ছে, কুমিল্লা ইউনিভার্সিটি, পুন্ড্র ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি, কুইন্স ইউনিভার্সিটি। তিনি জানান, সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি নামের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ওইসব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ছিল। এ প্রতিষ্ঠান উচ্চ আদালতে মামলা করে নিজেদের পক্ষে রায় পাওয়ার পর সরকারের অনুমতি পেয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ অনুযায়ী শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, পুন্ড্র ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি এবং কুইন্স ইউনিভার্সিটি নিজেদের পক্ষে রায় পেলেও এখন পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করার অনুমতি পায়নি। আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি সরকারের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তবে বন্ধ হয়ে যাওয়া কুমিল্লা ইউনিভার্সিটি কোনো ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করছে না।
এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) যৌথ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বন্ধ ঘোষিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীদের ভর্তির যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষে অনুমোদনপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অধ্যয়নের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য আমিনা আহমেদের লিখিত প্রশ্নের জবাবে নুরুল ইসলাম নাহিদ জানান, ২০১০ সালে মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৬২ লাখ ১৩ হাজার ২৪৪ জন । ২০১৫ সালে তা হয়েছে এক কোটি চার লাখ ৬০ হাজার ৮৯৩ জন। অর্থাৎ বিগত পাঁচ বছরে মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে ৪২ লাখ ৪৭ হাজার ৬৪৯ জন। তিনি বলেন, ২০১০ থেকে ২০১৪-১৫ অর্থবছর পর্যন্ত সময়ে ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে স্নাতক (পাস ) ও সমমান পর্যায় পর্যন্ত মোট প্রায় এক কোটি ৯১ লাখ ৬৬ হাজার৭৯৪ জন শিক্ষার্থীকে প্রায় তিন হাজার ৩২৮ কোটি ৮৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা উপবৃত্তিসহ আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
সরকারদলীয় সংসদ সদস্য মামুনুর রশীদ কিরণের লিখিত প্রশ্নের জবাবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার জানিয়েছেন, শিক্ষার প্রাথমিক স্তরে প্রতি ১০০ জনে ২১ জন শিশু ঝরে যায়। মন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তিকৃত শিশুর সংখ্যা এক কোটি ৯৫ লাখ ৫২ হাজার ৯৭৯ জন। ভর্তির হার ৯৭ দশমিক ৭ শতাংশ, আর ঝরেপড়ার হার ২০ দশমিক ৯ শতাংশ।’
শতভাগ শিশুকে বিদ্যালয়ে আনতে ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে বলে জানান প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার। মন্ত্রী আরো জানান, ঝরেপড়া রোধ করতে উদ্বুদ্ধকরণ সভা, উঠান বৈঠক, হোম ভিজিট, আনন্দ স্কুলের মাধ্যমে ভর্তিকরণ, শিশুদের শারীরিক ও মানসিক শাস্তিপ্রদান রদ ইত্যাদি নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।