‘আবোল তাবোল কয়া এমপি লিটন গুলি মারিল’
‘আমি ব্যায়াম করবার লাগছি। এমপি লিটন গাড়িখ্যান বামনডাঙ্গা থেকে আইসছে। আসিয়ে থামাইল, থামাইয়া আবোল তাবোল কয়, কুত্তার বাচ্চা কয়, কয়া গুলি মারিল।’
এনটিভির কাছে এভাবেই বর্ণনা দিল সৌরভ। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার একটি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির এ ছাত্র আজ শুক্রবার ভোরে ব্যায়াম করার সময় গুলিবিদ্ধ হয়েছে। সৌরভ ও তার পরিবারের অভিযোগ, গাইবান্ধা-১ আসন থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন নিজেই তাকে গুলি করেছেন।
সৌরভ বলে, ‘তিনটা-পাঁচটা (গুলি) মারিয়া, গাড়িখান সোজা আমাদের বাড়ির তেপতির (তিনমাথা) ওডে (ওখানে) গেল।
যায়া (গিয়ে) জিনিসটা বাইর করিল... কাক্কুক (চাচাকে) ইশারা করি ডাকায়, কাক্কু আইসছে, বমা (গুলি) ভরবার ধরছে, ডাইবর (ড্রাইভার) কাক্কুক ইশারা করছে, এইদেন করি যাইবার কইছে, কাক্কু পালিয়ে গেইছে, তারপর গাড়িডে সোজা সুন্দরগঞ্জ মুখে গেইছে।’
সৌরভ সুন্দরগঞ্জের গোপালচরণ এলাকার সাজু মিয়ার ছেলে। এখন সে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার দুই পায়ে গুলি লেগেছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
সৌরভের মা বলেন, “ঘুম থাকিয়া উঠিয়া কয় আম্মু আমি ব্যায়াম কত্তে যাই; তো আমি কই যাও। তারপর ওর বাপ আর আমি ঘুমাইতে আছি। তারপর ঘুমত শুনলাম, আমার একটা দেওর আছে, তাই (সে) কয়, ‘ওই যে ওই দিকে গুলি ফুটিয়া আসিল, চাইর-পাঁচটা, কাক যে নাগিল জানি না।’ তারপর এর চাচা খুলিত (উঠানে) গরু বাইর করে। (এ সময় এমপি লিটন) এর চাচাকে ইশারা করি ডাকায়, এর চাচা বোগলত (কাছে) গেইছে, যাওয়ার পর, এর চাচাক গুলি করিবার ধরছে...। (এ সময়) ড্রাইভার ইশারা করি সরি যাইবার কইল, (তখন) এর চাচা পলাইছে। পরে পুলের কাছে যে জায়গায় গুলি দিছে আমার ছাওক (বাচ্চাকে), ওই বাড়ির একটি ছেলে আসি কইল, তোমার ছেলে সৌরভক গুলি করছে, সৌরভ কাইনবার নাগছে, রক্ত পইচ্ছে (পড়ছে)।’
সৌরভের মা আরো বলেন, তিনি গিয়ে দেখেন কাজীবাড়ির লোকজন সৌরভকে রিকশায় তুলে স্থানীয় হাসপাতালে নিচ্ছেন। কিন্তু সেখানে চিকিৎসক নেই। তাই রংপুর নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করছে। তিনি অভিযোগ করেন, এমপি লিটন গুলিবিদ্ধ সৌরভকে রংপুরে নিতেও বাধা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এমপি গাড়ি আটকাইছে। কয় কুত্তার বাচ্চা, শুয়োরের বাচ্চা... কয়া ড্রাইভারক পিস্তল ধরছে... আমার এম্বুলেন্সের ড্রাইভার.. মানে নিয়্যা আসতে দেয় না গাড়িট্যা।’ পরে অনেক কষ্টে সৌরভকে রংপুরে নেওয়া সম্ভব হয় বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে এমপি লিটনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গাইবান্ধার পুলিশ সুপার (এসপি) আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি বিষয়টি নিশ্চিত হলে আপনাদের নিশ্চিত করব।’