বরগুনায় গৃহবধূকে ‘হত্যার পর আত্মহত্যা বলে প্রচারের চেষ্টা’
বরগুনা সদর উপজেলায় তানজিলা আক্তার (২২) নামের এক গৃহবধূকে হত্যার পর মুখে কীটনাশক ঢেলে আত্মহত্যা বলে প্রচার করার অভিযোগ উঠেছে শ্বশুরবাড়ির স্বজনদের বিরুদ্ধে।
তানজিলাকে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে রাত ৮টার দিকে তানজিলার মা হাওয়া বেগম দাবি করেন, শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতনে মৃত্যু হয়েছে তানজিলার।
তানজিলা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের লবণগোলা গ্রামের মো. রাজা মিয়ার মেয়ে এবং সদরের এম বালিয়াতলী ইউনিয়নের বানাই এলাকার মো. জাহাঙ্গীরের স্ত্রী। তাঁদের এক সন্তান রয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য তানজিলার মরদেহ বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
তানজিলার মা হাওয়া বেগম জানান, আট বছর আগে তানজিলার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে স্বামীর বাড়িতে থাকতেন তিনি। সেখানে সামান্য ঘটনায় শ্বশুরবাড়ির স্বজনদের সঙ্গে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকত তাঁর। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শুক্রবার বিকেলে তানজিলাকে নির্যাতন করা হলে মৃত্যু হয় তাঁর। এরপর মৃত্যুর ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে প্রমাণ করার জন্য তানজিলার মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন তাঁর শাশুড়ি সাজেদা বেগম ও দেবর মো. বাশার। এরপর চিকিৎসক তানজিলাকে মৃত ঘোষণা করলে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান তাঁরা।
এ বিষয়ে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. মেহেদী হাসান জানান, গতকাল সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে তানজিলাকে মৃত অবস্থায় কয়েকজন স্বজন হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। এ সময় তানজিলার মুখ থেকে বুদবুদ বের হচ্ছিল। এ সময় তাঁর সঙ্গে আসা স্বজনরা জানান, তানজিলা কীটনাশক পান করেছেন। এ ছাড়া তানজিলার চোখে-মুখে কীটনাশক পান করার লক্ষণ ছিল বলেও জানান এ চিকিৎসক।
এ বিষয়ে বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। তাই আমরা ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’