পি কে হালদারের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ
তিন হাজার ৬০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে বিদেশে থাকা ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেডের পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদারের (পি কে হালদার) বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করেছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অরগানাইজেশন (ইন্টারপোল)।
আজ শুক্রবার পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি সোহেল রানা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজ শুক্রবার বাংলাদেশ পুলিশের অনুরোধে এ রেড নোটিশ জারি করে ইন্টারপোল। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে প্রয়োজনীয় সব তথ্য দিয়ে ইন্টারপোলের কাছে আবেদন করেছিল বাংলাদেশ পুলিশ। ইন্টারপোলের একটি বিশেষ কমিটি আবেদন ও এর সঙ্গে সংযুক্ত ডকুমেন্টস পর্যালোচনা করে আবেদনটি অনুমোদন করে।
ইন্টারপোলের কেন্দ্রীয় ওয়েবসাইটে প্রকাশের পাশাপাশি সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইন্টারপোলের শাখাসমূহেও পাঠানো হয়েছে এই রেড নোটিশ। এই রেড নোটিশটি আগামী পাঁচ বছরের জন্য জারি থাকবে। তবে, প্রয়োজনে আবেদনটির মেয়াদ নবায়নযোগ্য।
রেড নোটিশে পলাতক আসামি পি কে হালদারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়েরকৃত দুর্নীতি দমন আইন, ২০০৪-এর ২১(১) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
এর আগে, গত মঙ্গলবার পুলিশ সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়েছিল, পি কে হালদারকে ধরতে তার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারির আবেদন পাঠানো হয়েছে। পুলিশের সেই আবেদন গ্রহণ করে আজ শুক্রবার রেড নোটিশ জারি করল ইন্টারপোল।
প্রশান্ত কুমার হালদার ব্যাংকপাড়ায় পি কে হালদার নামে পরিচিত। তিনি বিভিন্ন আর্থিকপ্রতিষ্ঠান থেকে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে লাপাত্তা রয়েছেন। এরমধ্যে একবার টাকা ফেরতের শর্তে দেশে ফিরতে চাইলেও দেশে ফিরলে গ্রেপ্তার হতে হবে হাইকোর্টের এমন আদেশের পর অসুস্থতার কথা বলে আর ফেরেননি তিনি। জানা গেছে, কানাডার বেগমপাড়ায় বাড়ি করে রাজকীয় জীবনযাপন করছেন তিনি।
বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, পি কে হালদার বিভিন্ন আর্থিকপ্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থেকে লোপাট করেছেন অন্তত তিন হাজার ৬০০ কোটি টাকা। পি কে হালদার প্রথমে রিলায়েন্স ফাইন্যান্স এবং পরে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। এমন আরো কিছু প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ও বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি) ইত্যাদি।
অভিযোগ রয়েছে, ওই সব প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন এবং নতুন আরো কিছু কাগুজে প্রতিষ্ঠান তৈরির মাধ্যমে প্রায় তিন হাজার ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও বিদেশে পাচার করেছেন পি কে হালদার। নিজেও পাড়ি জমিয়েছেন বিদেশে।
ক্যাসিনো অভিযানের ধারাবাহিকতায় পি কে হালদারের বিরুদ্ধে এরই মধ্যে প্রায় ২৭৫ কোটি টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। এ ঘটনায় দুদকের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ বাদী হয়ে মামলা করেন। তবে মামলা করার আগেই লাপাত্তা হন পি কে হালদার।