গৌরীপুর পৌর নির্বাচনে দুই সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা
ময়মনসিংহের গৌরীপুর পৌরসভা নির্বাচনের দিন দুই সাংবাদিক মাসুদ রানা ও নুরুজ্জামানের ওপর হামলা ও মারধর করে আহত করা এবং এনটিভির ক্যামেরা ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। হামলার শিকার মাসুদ রানা বাদী হয়ে আজ রোববার রাতে গৌরীপুর থানায় মামলাটি করেন।
গৌরীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ কামাল হোসেন এই খবর নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে কামাল হোসেন জানান, গত ৩০ জানুয়ারি গৌরীপুর পৌরসভা নির্বাচন চলাকালে দুপুর পৌনে ১টার দিকে পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের শেখ লেবু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলেন মাসুদ রানা। তাঁর সঙ্গে ছিলেন গাজী টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি কাজী মো. মোস্তফা, ৭১ টেলিভিশনের ক্যামেরাপারসন নুরুজ্জামান, আরটিভির জেলা প্রতিনিধি বিপ্লব বসাক, একুশে টেলিভিশনের বিভাগীয় প্রতিনিধি আতাউর রহমান জুয়েল, মানবজমিন পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার মতিউল আলম, দৈনিক করতোয়া পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি নজিব আশরাফ, মানবজমিন পত্রিকার ফটো সাংবাদিক ফখরুল আকন্দ, দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার আঞ্চলিক প্রতিনিধি সুপ্রিয় ধর বাচ্চু, দৈনিক জনতা পত্রিকার গৌরীপুর উপজেলা প্রতিনিধি শেখ মো. বিপ্লবসহ অনেকেই। এ সময় কেন্দ্র সংলগ্ন মাঠে মেয়র পদপ্রার্থী সৈয়দ রফিকুল ইসলাম ও শফিকুল ইসলাম হবির সমর্থকদের মধ্যে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয় এবং একপর্যায়ে সংঘর্ষ বাধে। সেই সংঘর্ষের ভিডিওধারণ করতে গেলে অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১৫ জন সংঘর্ষকারী বেআইনি জনতাবদ্ধে হত্যার উদ্দেশ্যে বাঁশের লাঠি, রাম দা দিয়ে মাসুদ রানা ও একাত্তর টিভির ক্যামেরাপারসন নুরুজ্জামানের ওপর হামলা চালিয়ে বেধড়ক মারধর করে। তারা দৈনিক ডেইলি ট্রাইব্যুনাল পত্রিকার ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধি ও এনটিভির ময়মনসিংহ প্রতিনিধির ব্যক্তিগত ক্যামেরাপারসন মাসুদ রানার পা, পিঠ ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এবং ৭১ টেলিভিশনের ক্যামেরাপারসন নুরুজ্জামানের শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। এ সময় মাসুদ রানার হাতে থাকা এনটিভির ক্যামেরা ভাঙচুর করে আনুমানিক সাড়ে তিন লাখ টাকার ক্ষতিসাধন করে। তাদের ডাকচিৎকারে কেন্দ্রে থাকা অন্য সাংবাদিকরা তাদের উদ্ধার করে আহত অবস্থায় গৌরীপুর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়।
গৌরীপুর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের চিকিৎসা দেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য মাসুদ রানাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। হামলার পর একাত্তর, যমুনা ও চ্যানেল ২৪ সহ বিভিন্ন টেলিভিশন সরাসরি সম্প্রচার করেছে। পরের দিন, সমকাল, যুগান্তর, বাংলাদেশ প্রতিদিন, নয়াদিগন্ত ও দৈনিক মানব জমিন পত্রিকায় প্রিন্ট এবং অনলাইনে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এ ছাড়া দেশের প্রথম সারির অনলাইন পোর্টালে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সে সব বাদীর কাছে সংরক্ষিত আছে। হামলার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টালে হামলাকারীদের ছবিসহ সংবাদ প্রতিবেদন প্রচারিত হয়েছে, যা হামলাকারীদের শনাক্ত, তাদের অপরাধ ও ঘটনা প্রমাণ করবে বলেও দাবি করেন বাদী মাসুদ রানা।
এ বিষয়ে গৌরীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’