ভোটে সন্তুষ্ট কমিশন, খুনের দায় প্রার্থীদের : ইসি সচিব
চতুর্থ ধাপের নির্বাচনি সহিংসতায় চট্টগ্রামের পটিয়ায় দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় দায় কার- এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেছেন, ‘যে খুনটি হয়েছে, যে দুই প্রার্থী মারামারি করেছে, এই দায়টি তাদের। কারণ, তারা নিজেরা মারামারি করেছেন, খুন হয়েছেন।’
আজ রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের নিজ কার্যালয়ে এ কথা বলেন ইসি সচিব। তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু ভোটাররা যাঁরা কেন্দ্রে এসেছেন, ল এনফোর্সিং এজেন্সি যারা ছিল, আমাদের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা যাঁরা ছিলেন, তাঁরা প্রত্যেকে রিপোর্ট দিয়েছেন যে, ভোট নেওয়ার মতো পরিস্থিতি ছিল, সুষ্ঠু ছিল।’
ইসি সচিব আরো বলেন, ‘রিটার্নিং কর্মকর্তারা নির্বাচন কমিশনকে প্রতি ঘণ্টায় ঘণ্টায় যে প্রতিবেদন দিয়েছেন এবং গণমাধ্যমে যা দেখেছে কমিশন, তাতে আমাদের কাছে মনে হয়েছে, ভোট ভালো হয়েছে।’
এই ভোটে নির্বাচন কমিশন কি সন্তুষ্ট- উত্তরে ইসি সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত সন্তুষ্ট।’
হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেন, ‘পটিয়াতে ভোটকেন্দ্রের বাইরে প্রার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে এবং তাতে একজন লোক মারা গেছে। এটা নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য দুঃখজনক। এটি ঘটুক আমরা কেউ প্রত্যাশা করি না। প্রার্থীদের মধ্যে যে মারামারি হয়েছে ভোটকেন্দ্রের বাইরে, এটি ভোটকেন্দ্রের ভেতরে ভোটগ্রহণে কোনো ধরনের প্রভাব ফেলেনি। ভোটগ্রহণ হয়েছে শান্তিপূর্ণভাবে। এই লোকটি মারা গেছে ভোটকেন্দ্র থেকে বাইরের মারামারিতে।’
সেখানে দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কি সঠিকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করেছে- এমন প্রশ্নে হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেন, ‘রিটার্নিং কর্মকর্তা যে রিপোর্ট দিয়েছেন, এতে আমার কাছে মনে হয়েছে যে, তাঁরা তাঁদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেছেন।’
নির্বাচন কমিশন এর দায় এড়াতে পারে কি না- এমন প্রশ্নে সচিব বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা ছিল একটি প্রাণও যেন ঝরে না পড়ে। প্রার্থীরা এত বেশি ইমোশনাল হয়ে যায়…। ওই ভোটকেন্দ্রে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ছিল। কেন্দ্রের বাইরে দুই প্রার্থীর মধ্যে, ঘরে ঘরেও তো তর্ক হতে পারে। তারা বাইরে গিয়ে ঝগড়া করেছে, সেখানে একজন নিহত হয়েছেন। এখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওই জায়গায় গিয়ে ইন্টারভেন্ট করার সুযোগ ওই মুহূর্তে ছিল না। এটি আমাদের কাছে মনে হয়েছে।’
যে এলাকায় নির্বাচনি সহিংসতায় একজন মারা গেলেন, সেই এলাকার ভোটে কোনো প্রভাব পড়েছে কি না- জানতে চাইলে হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেন, ‘এটি প্রার্থীদের মধ্যে একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। হঠাৎ করে হয়ে গেছে, একজন লোক মারা গেছে। কিন্তু যারা ভোট দেওয়ার, তারা তো ভোটকেন্দ্রে যাবে। যে জায়গায় মারামারি হয়েছে, সেই জায়গায় ভোটাররা তো যাবে না।’
ইসি সচিব বলেন, ‘চতুর্থ ধাপে ৫৫টি পৌরসভায় ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হয়েছে। এখন এর গণনা চলছে। পুরো দেশেই শান্তিপূর্ণভাবে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে।’
‘নরসিংদীর চারটা ভোটকেন্দ্রে কিছু অনিয়মের কারণে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ভোট বন্ধ করে দিয়েছেন। নোয়াখালীর সুনাইমুড়ীতে একটি কেন্দ্রের ভোট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শরীয়তপুরের ডামুড্যায় দুটি কেন্দ্রের ভোট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ সাতটি কেন্দ্রের ভোট বন্ধ করা হয়েছে। বাকি ৫০৩টি কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। এখন ভোট গণনার কাজ চলছে।’