টিকার অভাব নেই, আরও ২৫ লাখ আসছে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
দেশে করোনার ভ্যাকসিনের কোনো অভাব নেই উল্লেখ করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, প্রতিটি ভ্যাকসিন কেন্দ্রের স্থানীয় লোকের হার ও চাহিদা অনুযায়ী প্রথম ডোজের ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হয়েছে। কোনো কোনো কেন্দ্রে এই চাহিদা ও রেজিস্ট্রেশনের হার তুলনামূলক অনেক বেশি হয়ে গেছে। এ কারণে কিছু কেন্দ্রে ভ্যাকসিন স্বল্প সময়ের জন্য কমে গেলেও সময়মতো সেখানে চাহিদা মাফিক ভ্যাকসিন পাঠিয়ে দেওয়া হবে।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘ভ্যাকসিন গ্রহণে ইচ্ছুক যেকোনো ব্যক্তি সুরক্ষা অ্যাপে রেজিষ্ট্রেশন করলে তিনি দুদিন আগে পরে ভ্যাকসিন অবশ্যই পাবেন। কোনো কেন্দ্রে রেজিস্ট্রেশন করা ব্যক্তির সংখ্যা বেশি সংখ্যক হলে সেক্ষেত্রে ভ্যাকসিন গ্রহণের তারিখ কিছুটা পেছনে চলে গেলেও ভ্যাকসিন পেতে কোনো সমস্যা হবে না।’
‘কারণ, শুরুতেই দেশে ৭০ লাখ ভ্যাকসিন আনা হয়েছে। আবার এর মধ্যেই এই ২২ ফেব্রুয়ারি দেশে আরও ২৫ লাখ ভ্যাকসিন আনা হচ্ছে। এভাবে প্রতি মাসেই নিয়মিতভাবে ভ্যাকসিন আনা হবে। ফলে ভ্যাকসিনের অভাব কখনই হবে না এবং দেশের সবাই ভ্যাকসিন পাবেন’, যোগ করেন জাহিদ মালেক।
আজ বুধবার দুপুরে ঢাকা ডেন্টাল কলেজে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ও মুজিব কর্নারের উদ্বোধন এবং অডিটোরিয়ামের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী। এ সময় তিনি আরও জানান, এর মধ্যেই ১৩ লাখ মানুষ টিকা নিয়েছেন ও প্রায় ২৫ লাখ মানুষ রেজিস্ট্রেশন করেছেন।
স্বাস্থ্য খাতে সরকারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ‘গত সাত বছরে দেখেছি জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বাস্থ্যসেবা কোথা থেকে কোথায় এগিয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি ২০টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অনুমোদন দিয়েছেন। চারটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। প্রতিটি জেলায় ১০ বেডের আইসিইউ বেড, ১০ বেডের ডায়ালাইসিস সেন্টার হচ্ছে। আট বিভাগে আটটি ১৫তলা বিশিষ্ট ক্যানসার হাসপাতাল নির্মাণের কাজ শুরু হচ্ছে আগামী মাস থেকেই।’
সরকার সফলভাবে করোনা মহামারি মোকাবিলা করেছে উল্লেখ করে জাহিদ মালেক বলেন, ‘অনেকে ঘরে বসে নিরাপদে থেকে সমালোচনা করেছেন, কিন্তু অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াননি। আমরা মানুষের সেবা দিয়ে গেছি। অন্য অনেক দেশের অবস্থা খুবই নাজুক। বাংলাদেশে প্রত্যেকে চিকিৎসা পেয়েছে হাসপাতালে। শুরুতে যখন করোনাভাইরাসের ব্যবস্থাপনাই কেউ জানতো না, সেখানে অব্যবস্থাপনা কিসের। তবু আমরা মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা দিয়েছি।’
জাহিদ মালেক আরও বলেন, ‘আজকে আমাদের সংক্রমণের হার অনেক কম। সুস্থতার হার প্রায় ৯০ শতাংশ। ডাক্তার-নার্সরা জীবন দিলো, কিন্তু সমালোচনা থামছে না। আমাদের প্রশংসা করতে হবে, প্রশংসা করলে চিকিৎসক, নার্স, টেকনোলজিস্টরা আরও বেশি অনুপ্রাণিত হবে।’
যে কারণে দ্বিতীয় ডোজ আট সপ্তাহ পরে
এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘টিকার দ্বিতীয় ডোজ চার সপ্তাহ পরে নেওয়ার কথা ছিল। এখন তা আট সপ্তাহ করা হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুসারে এই সিদ্ধান্ত আমরা নিয়েছি। অক্সফোর্ডের এই ভ্যাকসিন প্রথম ডোজ দেওয়ার পর দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার জন্য তিন মাস সময় পাবেন।’
দ্বিতীয় ডোজ যত দেরিতে নিবেন, শরীরে তত বেশি অ্যান্টিবডি তৈরি হবে উল্লেখ করে জাহিদ মালেক আরও বলেন, ‘ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা অনেক বেশি হবে। এজন্য আমরা দ্বিতীয় ডোজের সময় নির্ধারণ চার সপ্তাহের বদল আট সপ্তাহ করেছি।’
এর আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ঢাকা ডেন্টাল হাসপাতালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুর্যাল উন্মোচনসহ অডিটোরিয়ামের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং মুজিব কর্নার উদ্বোধন করেন।
ঢাকা ডেন্টাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. হুমায়ুন কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) অধ্যাপক ডা. এম. ইকবাল আর্সলান, মহাসচিব অধ্যাপক এম এ আজিজ প্রমুখ।