যারা ইতিহাসের বিকৃতি ঘটায় তারা দুষ্কৃতকারী : তথ্যমন্ত্রী
যারা ইতিহাস বিকৃতি ঘটায়, তারা ইতিহাসের পাতায় এক ধরনের দুষ্কৃতকারী বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার এই সুবর্ণজয়ন্তীতে আমি আশা করব এতদিন ধরে বিএনপিসহ যেসব দল ইতিহাস বিকৃতি করার মতো যে ভুলগুলো করেছে, তারা সেই ভুল থেকে বের হয়ে আসবে। তাহলেই দেশের মানুষ তাদের সাধুবাদ দেবে।’
আজ শনিবার চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) আয়োজিত সিটি আউটার রিং রোডে সাইকেল লেনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আশা করেছিলাম তারা (বিএনপি) স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর বছরে সত্যটাকে মেনে নিবেন, ইতিহাসকে মেনে নিবেন। কিন্তু তারা জন্মলগ্ন থেকে যে ইতিহাস বিকৃতি ঘটিয়ে আসছে কয়েকদশক ধরে, ৭ মার্চ পালন করতে গিয়েও সেটি থেকে বেরিয়ে আসতে পারে নাই।’
সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ, বোর্ড সদস্য মো. জসিম উদ্দিন, কে বি এম শাহজাহান, জসিম উদ্দিন শাহ, এম আর আজিম, রোমানা নাছরিন, সচিব আনোয়ার পাশা প্রমুখ।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘কদিন আগে আমরা ৭ মার্চ উদযাপন করেছি। যেদিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘‘এবারের সংগ্রাম আমদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম,” পরের দিন পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইর পক্ষ থেকে দেশটির সদর দপ্তরে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছিল। চতুর শেখ মুজিব কার্যত পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা ঘোষণা করে দিলেন। তাদের চেয়ে চেয়ে তাকিয়ে থাকা ছাড়া উপায় ছিল না। তাঁকে আবার সেজন্য অভিযুক্তও করা যাচ্ছে না।’
‘বঙ্গবন্ধু এমনভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, জনগণ বুঝতে পেরেছিল কী করতে হবে। তখন সবাই মাঠে নেমে পড়েছিল, “বাঁশের লাঠি তৈরি কর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর” স্লোগানে। কিন্তু পাকিস্তানিরা সেটা বুঝতে পারে নাই, বুঝলেও অভিযুক্ত করতে পারে নাই। এখন দেখলাম ৭ মার্চ পালন করতে গিয়ে বিএনপি যে বক্তব্য দিল, পাকিস্তানিরা যেমনি বুঝতে পারে নাই, তেমনি বিএনপিও বুঝতে পারে নাই। পাকিস্তানিদের বুঝের সঙ্গে বিএনপির বুঝের খুব মিল রয়েছে।’-যোগ করেন তথ্যমন্ত্রী।
পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের বর্ণনা দিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজ থেকে কয়েক বছর আগে মানুষ ধারণা করেনি পতেঙ্গা সৈকতে এমন একটি সি-বিচ হবে। এটি যখন প্রথম উন্মুক্ত করেছিল সেটি সবাইকে অবাক করেছিল। একেবারে দুবাই সি-বিচের আদলে এত সুন্দর করে এটাকে সাজানো হয়েছে। পতেঙ্গা সি-বিচ আগেও ছিল। পৃথিবীর পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সেটির আধুনিকায়ন প্রয়োজন হচ্ছে, যেটি বহু বছর ধরে হয়নি। বঙ্গবন্ধুকন্যার হাত ধরে সিডিএর মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিপ্রেক্ষিতে পতেঙ্গা সি-বিচ সৌন্দর্যমণ্ডিত হয়েছে।’
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সি-বিচের অন্যতম আকর্ষণ ও উপাদান হচ্ছে বালুচর। এখানে আগে যে পরিমাণ বালুচর ছিল সেটা হারিয়ে গেছে। বিচ বলতে বালুচরকেই বুঝায়, দুবাই সি-বিচে প্রথমে বালু ছিল না, পরে বাইরের থেকে বালু এনে সেখানে বালুচর বানানো হয়েছে। প্রয়োজনে বাইরের থেকে এনে এখানেও বালুচর করতে হবে।’
‘প্রথম থেকেই সিডিএর কাছে নিবেদন ছিল এখানে একটা সাইকেল লেন রাখার। আমি বিদেশে পড়ালেখার সময় সাইকেল চালিয়ে ভার্সিটিতে আসা-যাওয়া করতাম। আমাদের শহরগুলোতেও এ ধরনের সাইকেল লেন করতে পারলে ভালো হতো।’-যোগ করেন তথ্যমন্ত্রী।
চট্টগ্রাম শহরের দুএকটি রাস্তায়ও সাইকেল লেন করার জন্য সিডিএকে অনুরোধ জানান তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।