বাসের সঙ্গে সংঘর্ষে মাইক্রোর সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ছাই ১৭ জন
রাজশাহীর পবা উপজেলায় বাসের সঙ্গে সংঘর্ষে একটি মাইক্রোবাসের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর ১৭ জন নিহত হয়েছেন। এ সময় আরও তিনজন আহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে উপজেলার কাটাখালী থানা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস গণমাধ্যমকে বলেন, নিহতদের মধ্যে ঘটনাস্থলেই ১১ জন এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও ছয়জন মারা গেছেন। নিহতদের মধ্যে আটজন পুরুষ, পাঁচজন নারী ও চারজন শিশু। এর মধ্যে ১৩ জন তিনটি পরিবারের সদস্য বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ ছাড়া মাইক্রোবাসের চালকের পরিচয় জানা গেছে। বাকি তিনজনের পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
নিহতদের মধ্যে ১৪ জনের পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন- রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার রাজারামপুর গ্রামের সালাহউদ্দিন, তাঁর স্ত্রী শামছুন্নাহার, শামছুন্নাহারের বোন কামরুন্নাহার, তাদের সন্তান সাজিদ ও সাবা, দারিকাপাড়া গ্রামের মোখলেসুর, বড় মজিদপুর গ্রামের ফুল মিয়া ও তাঁর স্ত্রী নাজমা ও তাদের সন্তান সুমাইয়া, সাদিয়া ও ফয়সাল, পীরগঞ্জ সদরের তাজুল ইসলাম ভুট্টু, তাঁর স্ত্রী মুক্তা ও সন্তান ইয়ামিন।
অতিরিক্ত উপকমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, রংপুর থেকে তিনটি পরিবারের ১৩ জন একটি হায়েস মাইক্রোবাসে করে রাজশাহী নগরীর রয়েল হাসপাতালের প্রধান হিসাবরক্ষক হেদায়েতুল ইসলাম তারিকের বাসা হয়ে চিড়িয়াখানায় পিকনিক করতে আসছিলেন। দুপুর পৌনে ২টার দিকে কাটাখালি মোড়ে বিপরীত দিক থেকে আসা হানিফ পরিবহণের একটি বাসের সঙ্গে মাইক্রোবাসটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মাইক্রোবাসটিতে আগুন ধরে যায়। এ সময় ঘটনাস্থলেই মাইক্রোবাসের ১১ জন পুড়ে মারা যায়। হাসপাতালে মারা যায় আরও ছয়জন। আহত অপর তিনজন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের রাজশাহী সদর স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আব্দুর রউফ বলেন, সংঘর্ষের পর মাইক্রোবাসটির গ্যাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হলে আগুন লেগে যায়। আগুন লাগা মাইক্রোবাসটি যেখানে গিয়ে থামে তার পাশে একটি লেগুনা দাঁড়িয়ে ছিল। তাতে কোনো যাত্রী ছিল না। পরে আগুন সেই লেগুনাতে ছড়িয়ে পড়ে।
ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘মাইক্রোবাসটির ভেতরে চার পরিবারের ১৩ জন ছিলেন বলে জানতে পেরেছি। সবাই মারা গেছেন। এ ছাড়া বাসের আরও চারজন মারা গেছেন। এদের মধ্যে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর ছয়জনকে মৃত ঘোষণা করা হয়। আর ঘটনাস্থলে মাইক্রোবাসের ভেতর থেকে ১১ জনের লাশ বের করা হয়।’
স্থানীয় সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজ দেখা গেছে, ঘটনার সময় বাঁশভর্তি ব্যাটারিচালিত একটি ভ্যানগাড়ি ও এক কিশোর বাইসাইকেল চালিয়ে শহরের দিকে আসছিল। একই অভিমুখে দ্রুত গতিতে মাইক্রোবাসটিও আসছিল। বিপরীত দিক থেকে হানিফ পরিবহনের একটি বাস যাচ্ছিল। মাইক্রোবাসটি ওই বাঁশভর্তি ভ্যানগাড়িটি ওভারটেক করার মুহূর্তে বাসটি ঢুকে পড়ে এবং মাইক্রোবাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। বাসটি রাস্তার পাশের একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে আটকে যায়।