রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র বাংলাদেশের গর্বের প্রতীক : ইয়াফেস ওসমান
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র শুধু বিদ্যুৎকেন্দ্রই নয়, এটি আমাদের গর্ব ও মর্যাদার প্রতীক বলে মন্তব্য করেছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। তিনি বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মাধ্যমে বহির্বিশ্বেও বাংলাদেশের মর্যাদা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আজ সোমবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এটমিক রিপোর্টার্স বাংলাদেশ আয়োজিত ‘বাংলাদেশের ৫০ বছর, বিজ্ঞান প্রযুক্তি নিয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী।
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘কেবল স্বপ্ন দেখলেই হয় না। স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হৃদয় দিয়ে কাজ করতে হয়। আমরা ভালোর দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। সারা বিশ্বের অনেক খবর পাওয়া যায়, কিন্তু পারমাণবিক ইস্যুতে কম খবর পাওয়া যায়। এ বিষয়ে আমাদের নিজেদেরও জ্ঞানের অভাব রয়েছে। যারা ছাত্র রয়েছেন তাদের জানতে হবে, শিখতে হবে। সব সময় সব কথা জানলেও নানা সিকিউরিটি সেফটি ইস্যুর কারণে বলা যায় না।’
এটমিক রিপোর্টার্স বাংলাদেশ (এআরবি) সভাপতি আরিফুল সাজ্জাতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন বাসস বোর্ডের চেয়ারম্যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ইসতিয়াক এম সৈয়দ, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিচালক ড. শৌকত আকবর, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আলী হোসেন, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এ এফ এম মিজানুর রহমান, এআরবির ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাসরুল্লাহ ও সেক্রেটারি ফয়েজ আহমেদ তুষার। অনুষ্ঠান শেষে এআরবির প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করেন মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান।
মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পর ফ্রান্সের সঙ্গে এই প্রকল্প নিয়ে কথা বলেন। সত্তরের নির্বাচনী দুটি সভায় আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেছিলেন, আমরা প্রকল্পটি হারালাম। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে ২০ বছর আগে আমরা এ সাফল্য অর্জন করতে পারতাম।
প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মস্কো গিয়ে প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করে এক পর্যায়ে খোলাখুলি বললেন, আমরা এ সম্পর্কে অবগত নই। আপনারা আমাদের ট্রাস্টেড বন্ধু। ভালো একটি প্রকল্প করে দেন। পুতিন বললেন, আমি নিজে দেখাশুনা করব। এ প্রকল্পের ঠিকাদারির কাজ যারা করছে তাদেরকে পুতিন সরকারের কাছে জবাবদিহি করতে হয়।’
‘এখানে কয়েক ধাপে মনিটরিং করা হয়। সে কারণে ভুল করার কোনো সুযোগ নেই। আমরা বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি, এ প্রকল্পে এক পয়সা ঘুষের কোনো বিষয় জড়িত নেই। সাড়ে ৫০০ ছেলেমেয়েকে প্রশিক্ষণ দিয়ে এনেছি। তারা কেউ বলতে পারবে না, এক পয়সা খরচ করতে হয়েছে। এখানে ২০ হাজারের মতো লোক কাজ করে দুই শিফটে। আমাদের ছেলেরা কাজের ক্ষেত্রে এ গ্রেড অর্জন করেছে। সারা দুনিয়াতে একটি স্থান নিয়েছে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বঙ্গবন্ধুর জীবনটাই ছিল বিজ্ঞানমনস্ক ভাবনার। তাঁর ছাত্রাবস্থা থেকে শেষ দিন পর্যন্ত ছিল বিজ্ঞানভাবনা। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, বাংলাদেশে কেরানি সৃষ্টির শিক্ষাব্যবস্থা থাকবে না।
ক্ষুদ্র ও সীমিত পরিসরে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আলোচনা করা কঠিন। যুদ্ধের পর যখন কোষাগার শুন্য তখন তিনি প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণ ও অবৈতনিক করেন। একজন সত্যিকারের প্রজ্ঞাবান মানুষের পক্ষে এটি সম্ভব। অজ্ঞান সমাজ থেকে জ্ঞানের সমাজের দিকে ধাবিত করেছেন বঙ্গবন্ধু। তাঁর সেই অগ্রযাত্রাকে আমরা যেন যথাযথভাবে এগিয়ে নিতে পারি।