মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিক ধর্মঘটে অচলপ্রায় ভোমরা স্থলবন্দর
মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিক ধর্মঘটের কারণে ট্রাক থেকে ভারতীয় পণ্য খালাস বন্ধ। ফলে চার দিন ধরে অচলাপ্রায় সাতক্ষীরার ভোমরা স্থল বন্দর। আজ রোববার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে আমদানিকারক সমিতি এ তথ্য জানায়।
সংবাদ সম্মেলনে আমদানিকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আবু হাসান বলেন, ‘আমরা শ্রম মজুরি আগেই কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পরিশোধ করলেও ঠিকাদার শ্রমিক দিচ্ছে না। ফলে ভোমরা বন্দর অচল হয়ে পড়েছে।’ তিনি বলেন ভোমরা বন্দর ষড়যন্ত্রের মুখে পড়েছে। দুর্নীতির কারণে এই বন্দরের উন্নতি ব্যহত হচ্ছে। তিনি বলেন, ভোমরা বন্দর থেকে প্রতি বছর গড়ে এক হাজার ২০০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হচ্ছে। এই বন্দরের ওপর অন্তত ৫০ হাজার মানুষ নির্ভরশীল। এখানে শ্রমিক রয়েছে কমপক্ষে পাঁচ হাজার।
আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতি প্রয়োজনীয় সংখ্যক শ্রমিক নিয়োগ করে বন্দর সচল করার দাবি জানিয়েছে। অপরদিকে ধর্মঘটী শ্রমিকরা ভোমরা বন্দরে তাদের দাবির স্বপক্ষে অনড় রয়েছে।
শ্রমিকরা জানান, ট্রাকপ্রতি যে মজুরি তাদের দেওয়া হয় তা খুবই নগণ্য। এজন্য বখশিশ হিসেবে তারা বাড়তি টাকা পেয়ে আসছিল। কিন্তু আমদানিকারকরা তা বন্ধ করে দেওয়ায় তারা কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। অপরদিকে আমদানি কারকরা বলছে, তারা ট্রাকপ্রতি বাড়তি টাকা ব্যয় করে বাইরের শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করাচ্ছে। তারা জানায়, বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে বিধি অনুযায়ী শ্রমিক মজুরির টাকা পরিশোধ করে থাকে তারা। পাশাপাশি বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ঠিকাদারের দায়িত্ব শ্রমিক সরবরাহ করা। অথচ ঠিকাদার তা না করায় শ্রমিকরা ধর্মঘটে নেমেছে। গত ১ এপ্রিল থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত পণ্য খালাস না করায় ভোমরা বন্দরে সহস্রাধিক গাড়ির জট বেঁধেছে। এতে পচনশীল ভারতীয় পণ্যও রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান তারিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ঠিকাদারের দায়িত্ব শ্রমিক সরবরাহ করা। তিনি আমাদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ। ড্রপ কম্যুনিকেশনের এই ঠিকাদার দেশের অন্য বন্দরে শ্রমিকদের চাহিদা হিসেবে আনলোডিং লোডিং বাবদ দুই দফায় টাকা পরিশোধ করলেও ভোমরা বন্দরে তিনি তা না করে চুক্তি ভঙ্গ করছেন। তাঁকে অবিলম্বে শ্রমিকদের চাহিদা অনুযায়ী মজুরি পরিশোধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি শর্ত ভঙ্গ করলে বিকল্প ব্যবস্থা নেবে সরকার। তবে এর জন্য সময় দরকার। তিনি বলেন গত ১ এপ্রিল থেকে শ্রম মজুরি বৃদ্ধির নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে তা বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছিল।
ভোমরা বন্দরের পরিচালক মনিরুল ইসলাম বলেন, ঠিকাদারের প্রতিনিধি এসেছে। তার সাথে আলোচনা চলছে। তাকে দ্রুত শ্রমিক নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আমদানি রপ্তানিকারক সমিতির সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ভোমরা সিঅ্যান্ড এফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আরাফাত হোসেন, সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম, আবুল হোসেন, নাজমুল আলম মিলন প্রমুখ।