জিএসপি ফিরে পেতে আরো কাজ করতে হবে : বার্নিকাট
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধা (জিএসপি) ফিরে পেতে বাংলাদেশকে আরো কিছু কাজ করতে হতে পারে বলে জানিয়েছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেনস বার্নিকাট। আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে এক যৌথ ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।
বৈঠকে কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘চলতি মাসের ২৩ তারিখ ওয়াশিংটনে টিকফার বৈঠক হবে। ওই বৈঠকের বিষয় নিয়ে আজ আমাদের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। টিকফার পাশাপাশি জিএসপিসহ অন্যান্য দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে। আমি রাষ্ট্রদূতকে বলেছি, জিএসপির ওপরে নির্ভর করছে টিকফার ভবিষ্যৎ। জিএসপি পাশ কাটিয়ে টিকফা সফল করা যাবে না।’
এ সময় মার্শা বার্নিকাট বলেন, ‘আমাদের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। টিকফা ও ওয়াশিংটনের বৈঠকের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি জিএসপি নিয়েও কথা বলেছেন বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী।’ টিকফার বৈঠকের পর বাংলাদেশ যেন জিএসপি সুবিধা ফেরত পায় সে জন্য তিনি কাজ করবেন বলে জানান। সব শর্তপূরণের মাধ্যমে বাংলাদেশ জিএসপি সুবিধা ফিরে পাবে বলেও আশা ব্যক্ত করেন তিনি।
বিফ্রিংয়ে বার্নিকাটের কাছে জানতে চাওয়া হয় যে, বাংলাদেশের নীতি নির্ধারকরা মনে করেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া সব শর্ত পূরণ করার পরেও শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে বাংলাদেশকে জিএসপি সুবিধা ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে না।
এ বিষয়ে বার্নিকাট বলেন, ‘এটা ঠিক নয় যে রাজনৈতিক কারণে সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না। কোনো রাজনৈতিক কারণে এই সুবিধা বাতিল করা হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র চায় বাংলাদেশের পোশাক শ্রমিকরা নিরাপদে থাকুক এবং বাংলাদেশ পোশাকশিল্পে আরো উন্নতি লাভ করুক। আমি অনেক কারখানা পরিদর্শন করেছি। সেখানে দেখেছি শ্রমিকরা খুব সুন্দর পরিবেশে কাজ করছে। তবে আমার জানামতে, আরো কিছু শর্ত হয়তো পূরণ করতে হতে পারে।’
জিএসপি সুবিধা পাওয়ার জন্য নতুন কোনো শর্ত দেওয়া হয়েছে কি না, জানতে চাইলে বার্নিকাট বলেন, ‘নতুন কোনো শর্ত দেওয়া হয়নি। তবে জিএসপি ফিরে পাওয়ার জন্য বাংলাদেশকে আরো কিছু কাজ করতে হবে।’
আজকের বৈঠকে অনেকগুলো বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেখানে নিরাপত্তা ইস্যু ও রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে বার্নিকাট বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বন্ধুরাষ্ট্র। সরকার দেশের নিরাপত্তা নিয়ে যে ব্যবস্থা নিয়েছে তা সন্তোষজনক।’
এ সময় তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘আমরা আলোচনা করেছি যে আমরা ঐকমত্যের ভিত্তিতে দুই দেশ কাজ করব। এবং তিনি টিকফার বিষয়ে বেশ কিছু ইতিবাচক কথা বলেছেন। জবাবে ওয়াশিংটনের বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে অংশ নিতে যাওয়া প্রতিনিধিরা সবাই মিলে সেখানে জিএসপির বিষয়টি জোরালোভাবে উপস্থাপন করব বলে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা ফোরাম চুক্তি (টিকফা) সই করে বাংলাদেশ। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক শক্তিশালী করার লক্ষে চুক্তিটি সই করা হয়। চুক্তিতে উভয় দেশের মধ্যে সেবা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অশুল্ক বাধা দূর করা, মেধাস্বত্ব বাস্তবায়ন, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার মূলনীতি মেনে শ্রম অধিকার বাস্তবায়নসহ বেশকিছু বিষয় রয়েছে।