‘উপায়’-এ সর্বনিম্ন ক্যাশ আউট রেট
অত্যাধুনিক ব্লক-চেইন প্রযুক্তি ও ডিভাইস অথেনটিকেশনের মতো নিরাপত্তা ফিচার যুক্ত করে মার্চে যাত্রা শুরু করা ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) সাবসিডিয়ারি ‘উপায়’ ইউএসএসডি ব্যবহারকারী গ্রাহকদের দিচ্ছে সবচেয়ে কম খরচে ক্যাশ আউট সুবিধা।
জানা গেছে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ১৭ই মার্চে যাত্রা শুরু করা উপায়-এর ইউএসএসডি ব্যবহারকারী গ্রাহকেরা ট্যাক্স-ভ্যাটসহ প্রতি হাজারে মাত্র ১৪ টাকায় ক্যাশ আউট করতে পারবেন, যা বাজারে প্রচলিত অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং সেবাপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের তুলনায় সর্বনিম্ন। গ্রাহকেরা *২৬৮# ব্যবহার করে উপায়-এর যেকোনো এজেন্ট পয়েন্ট থেকে ক্যাশ আউট করতে পারবেন।
বর্তমানে ইউএসএসডি কোডের বিকাশ এবং রকেটের ক্যাশআউট চার্জ প্রতি এক হাজার টাকায় ১৮ দশমিক ৫০ টাকা। ডাক বিভাগের মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান নগদ নিচ্ছে ১৪ দশমিক ৯০ টাকা।
উপায়-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইদুল হক খন্দকার বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সমীক্ষায় দেখেছি, বাংলাদেশের প্রায় ৭০ ভাগ মোবাইল লেনদেন সম্পন্ন হয় ইউএসএসডির মাধ্যমে। এই ব্যবহারকারীরা মূলত সমাজের সুবিধাবঞ্চিত, দরিদ্র ও স্বল্প আয়ের মানুষ। আমরা এই জনগোষ্ঠীর সুবিধার কথা ভেবেই ইউএসএসডির মাধ্যমে লেনদেনকারীদের জন্য বাজারের সবচেয়ে কম রেটে ক্যাশ আউট চার্জ নির্ধারণ করেছি।’
এ ছাড়া উপায় গ্রাহকেরা ইউসিবিএলের এটিএম ব্যবহার করে হাজারে মাত্র ৮ টাকায় ক্যাশ আউট করতে পারছেন। এটিও বাজারে সর্বনিম্ন রেট। উল্লেখ্য, উপায় অ্যাপ ব্যবহারকারীরাও হাজারে ১৪ টাকা খরচ করে ক্যাশ আউট করতে পারবেন। গুগল প্লে-স্টোর থেকে উপায় অ্যাপ ডাউনলোড করা যাবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম মেনে গ্রাহকেরা কোনো প্রকার চার্জ ছাড়াই এক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য অ্যাকাউন্টে যেকোনো পরিমাণে টাকা লেনদেন করতে পারবেন।
উপায়-এর মাধ্যমে মোবাইলে টাকা লেনদেন, ইউটিলিটি বিল পেমেন্ট, কেনাকাটার মূল্য পরিশোধ, রেমিট্যান্স গ্রহণ, বেতন প্রদান, এয়ারটাইম ক্রয় করা যাবে।
এ ছাড়া উপায় ব্যবহার করে গ্রাহকেরা বেশ কিছু এক্সক্লুসিভ সেবা গ্রহণ করতে পারবেন, যেমন ইন্ডিয়ান ভিসা ফি, ট্রাফিক ফাইন এবং তিতাস গ্যাসের (প্রি-প্রেইড) বিল পেমেন্ট। গ্রাহকেরা দেশজুড়ে ‘উপায়’-এর এজেন্ট এবং মার্চেন্ট নেটওয়ার্ক হতে এই সেবা নিতে পারবেন।
দীর্ঘ ৮ বছর ধরে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দিয়ে যাওয়া ইউসিবির ‘ইউক্যাশ’ ব্র্যান্ড উপায় চালুর সাথে সাথেই বন্ধ হয়ে গেছে। ইউক্যাশের গ্রাহকেরা বর্তমানে উপায়ের গ্রাহক হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার সব ধরনের সুযোগ উপভোগ করতে পারছেন।
উপায় প্ল্যাটফর্ম ডিজাইনের ক্ষেত্রে গ্রাহক-নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সাইদুল খন্দকার বলেন, ‘ডিজিটাল ব্যাংকিং ব্যবস্থায় হ্যাকিং, প্রতারণা ইত্যাদির কারণে অ্যাকাউন্টে থাকা টাকার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে ব্যবহারকারীদের মাঝে। তাই সর্বাধুনিক ব্লকচেইন প্রযুক্তিতে তৈরি উপায় প্ল্যাটফর্ম এসব নিরাপত্তাঝুঁকি থেকে মুক্ত। এর পাশাপাশি অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ডিভাইস অথেনটিকেশন ব্যবস্থা রয়েছে এবং মোবাইল হ্যান্ডসেট ও সিম গ্রাহকদের কাছে থাকলে, ওটিপি (ওয়ান টাইম পিন) ব্যবহার করে কেউ তার অ্যাকাউন্টে ঢুকতে পারবে না। গ্রাহকদের টাকা হারানোর ভয় নেই। এখানে গ্রাহক-নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।’
ব্যাংকিং সেবাবহির্ভূত একটা বিশাল জনগোষ্ঠীকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আর্থিক সেবা প্রদানের মাধ্যমে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বেগবান করতে ২০১১ সালে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু হয়। বর্তমানে ১৫টি ব্যাংক এই সেবাটি প্রদান করছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ইউসিবি ফিন্টেক কোম্পানির অনুকূলে মোবাইল ব্যাংকিং লাইসেন্স প্রদান করে। ইউসিবি ফিনটেক উপায় ব্র্যান্ড নামে মার্চে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে।