মাদারীপুরের শিবচরে স্পিডবোট দুর্ঘটনায় নিহত চার ব্যবসায়ীর মরদেহ তাদের নিজ উপজেলা মেহেন্দিগঞ্জে দাফন করা হয়েছে।

নিহত ব্যবসায়ী হলেন উলানিয়া বাজারের আহাদ ফ্যাশনের মালিক দুই ভাই রিয়াজ হোসেন (৩৩) ও সাইফুল ইসলাম (৩৫), উলানিয়া বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী সাইদুল হোসেন (২৭) ও পাতারহাট বন্দরের মুদি ব্যবসায়ী মনির চাপরাশি (৩৫)।

আজ মঙ্গলবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে এ তথ্য জানিয়েছেন মেহেন্দিগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মো. মনির হোসেন। তিনি জানান, গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় মরদেহগুলো স্বজনরা বুঝে পায়। আজ সকাল ৯টার দিকে উলানিয়ায় তিনজনের এবং সকাল ১০টায় পাতাহাটের ব্যবসায়ীর দাফন সম্পন্ন হয়।

ইউপি সদস্য জানান, তাঁর চাচাতো ভাই পাতারহাট বন্দরের মুদি ব্যবসায়ী মনির চাপরাশি আসন্ন ঈদ উপলক্ষে ঢাকায় মালামাল আনতে গিয়েছিলেন।  

নিহত রিয়াজ ও সাইফুলের বড় ভাই আজাদ হোসেন জানান, তাঁর দুই ভাই দোকানের মালামাল কেনার জন্য ঢাকায় গিয়েছিলেন। ফেরার সময় পদ্মা পাড়ি দিতে তারা প্রথমে গাছবাহি একটি ট্রলারে ওঠেছিলেন। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নামিয়ে দেওয়ায় পরে স্পিডবোটে উঠলে দুর্ঘটনায় দুজনই প্রাণ হারান। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুর্ঘটনার খবরে তার ভাইদের নাম প্রথমে জানতে পারেন। পরে শিবচর থানা পুলিশের পক্ষ থেকে ফোনে দুর্ঘটনার খবরটি নিশ্চিত করা হয়। তিনি জানান, নিহত সাইফুল মাত্র তিন মাস আগে বিয়ে করেছেন আর রিয়াজের দুটি মেয়ে সন্তান রয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, শিবচরের দুর্ঘনায় চারজনের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় পুরো মেহেন্দিগঞ্জে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্বজনদের কান্নায় নিহতদের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।

মেহেন্দীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল কালাম জানান, শিবচরের দুর্ঘটনায় মেহেন্দিগঞ্জের চারজন ছাড়াও বরিশাল বিভাগের আরও পাঁচজন রয়েছে। যার মধ্যে বরিশালের বন্দর থানার তেদুরিয়া এলাকার আনোয়ার চৌকিদার (৫০), বানারীপাড়া উপজেলার  আলাউদ্দিন ব্যাপারী (৪৫), ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার রাজাবাড়িয়া এলাকার নাসিরউদ্দিন (৪৫), পিরোজপুর জেলার সদর উপজেলার চরখানা এলাকার বাপ্পী (২৮) এবং পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া উপজেলার পসারিয়াবুনিয়া এলাকার জনি অধিকারী (২৬) রয়েছেন।

উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার সকাল ৬টার দিকে মাদারীপুরের শিবচরে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটের কাঁঠালবাড়ি ঘাট সংলগ্ন এলাকায় বালুবোঝাই বাল্কহেডে স্পিডবোটের ধাক্কা লাগে। এতে ২৬ জন নিহত হয়।