তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘খালেদা জিয়াকে আদৌ বিদেশ নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন আছে কি না সেটিই এখন বড় প্রশ্ন? বিএনপি কেন যে তাঁকে বিদেশ নিয়ে যেতে চায় সেটি বোধগম্য নয়। কারণ দেশেই তো খালেদা জিয়া সর্বোচ্চ চিকিৎসা সুবিধা পাচ্ছেন।’

খালেদা জিয়া আমার কাছে একজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘খালেদা জিয়া এখন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তিনি দ্রুত আরোগ্য লাভ করুন এটিই মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা, এটিই আমাদের কাম্য। খালেদা জিয়া যাতে সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা পান সেটির জন্য বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি সর্বোচ্চ চিকিৎসা সুবিধা এখন বাংলাদেশে পাচ্ছেন। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, তাঁকে বিদেশ নিয়ে যাওয়ার জন্য এখন বিএনপির ও পরিবারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে। যে সব দেশে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হচ্ছে, বিশেষ করে ইংল্যান্ডে, সেখানেও করোনা মহামারিতে হাজার হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে।’

আজ শনিবার দুপুরে বিশ্ব রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট দিবস-২০২১ উপলক্ষে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এসব কথা বলেন। রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি চট্টগ্রাম জেলা ও সিটি ইউনিট যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির নবনিযুক্ত ট্রেজারার এম এ ছালাম ও করোনাকালীন ভূমিকা রাখা কর্মীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। 

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ইদানিং দেখতে পাচ্ছি, বিএনপি দেশের মানুষের স্বাস্থ্য নিয়ে মোটেও উদ্বিগ্ন নয়। এ নিয়ে তাদের কোনো চিন্তাও নেই। তাদের সব চিন্তা এখন কেন্দ্রীভূত খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে। খালেদা জিয়ার তাপমাত্রা আছে কি নেই, এটি কত ডিগ্রি আছে, হাঁটুর ব্যথা আছে কি নেই- এটার মধ্যেই বিএনপির রাজনীতিটা এখন সীমাবদ্ধ।’

বিএনপিকে অনুরোধ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের চিন্তাটা শুধু খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের মধ্যে নিমগ্ন না রেখে জনগণের পাশে দাঁড়ান। যেভাবে মানুষের দোড়গোড়ায় আওয়ামী লীগ খাদ্য সহায়তাসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী দিচ্ছে, সেভাবে আপনারাও মাঠে এসে জনগণের কাছে বিতরণ করুন। তারপর আমাদের ভুলত্রুটি যদি থাকে সেটার সমালোচনা করার অধিকার আপনাদের তৈরি হবে।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘কিছু বিশেষজ্ঞ আছে যারা সব বিষয়ে বিশেষজ্ঞ। তারা করোনা মহামারির শুরুতে মত প্রকাশ করেছিলেন বাংলাদেশে হাজার হাজার মানুষ অনাহারে থাকবে এবং লাশ রাস্তায় পড়ে থাকবে। কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমত এবং বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রীর সঠিক নেতৃত্বের কারণে গত ১৪ মাসে একজন মানুষও না খেয়ে মৃত্যুবরণ করেনি।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের পরিস্থিতি হচ্ছে, করোনার জন্য যে ১২ হাজারেরও বেশি বেড রয়েছে তার ৭০ ভাগ বেড খালি আছে, অনেক আইসিইউ বেডও খালি আছে। করোনাকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর পদক্ষেপগুলো অত্যন্ত সফলভাবে কাজ করেছে। কিন্তু সমালোচকদের সমালোচনা থেমে নেই।’

বর্তমান প্রেক্ষাপটে রেড ক্রিসেন্টের কাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর্তমানবতার পাশে দাঁড়িয়ে রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরা যেভাবে কাজ করছেন সেটি সমাজের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী।  

রেড ক্রিসেন্ট চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ডা. শেখ শফিউল আজমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির নবনিযুক্ত ট্রেজারার এম এ ছালাম, জেলা ইউনিটের সেক্রেটারি মো. আসলাম খাঁন, সিটি ইউনিটের সেক্রেটারি আবদুল জব্বার প্রমুখ।