রাজন-রাকিবের মতো ত্বকীর হত্যারও বিচার দাবি
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেছেন, ‘রাজন ও রাকিবের ক্ষেত্রে দ্রুততার সঙ্গে ন্যায়বিচারের পথ উন্মুক্ত হওয়ার একটা দৃষ্টান্ত আমরা পেয়েছি। আমরা বিশ্বাস করি, ত্বকী হত্যার ক্ষেত্রেও বিচার বিভাগ তার পূর্ণ স্বাধীনতার স্বাক্ষর রাখবে।’
আজ সোমবার সকালে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন মিজানুর রহমান।
নারায়ণগঞ্জে দুর্বৃত্তদের হাতে নিহত মেধাবী শিক্ষার্থী ত্বকী হত্যার বিচারের ব্যাপারে মিজানুর রহমান আরো বলেন, ‘সব বিবেচনার ঊর্ধ্বে থেকে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য যা যা করার দরকার সেটি করে ন্যায়বিচারের আরেকটি দৃষ্টান্ত তাঁরা আমাদের সবার সামনে উপস্থাপন করবেন।’
মিজানুর রহমান আরো বলেন, ‘প্যারিসে হামলার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারী তিনজন চিহ্নিত হয়েছে। আমরা কিন্তু ওরকমই একটা দৃষ্টান্ত দেখতে চাই। কিছুদিন আগেও আমি বলেছি, আমাদের ভবিষ্যৎকালের কথা বলার এটা আমাদের বড় বিরক্ত করে ফেলেছে। হবে, হচ্ছে, খুব শিগগিরই হবে, আমরা সমাধান বের করব, এগুলো না। আমরা এখন অতীত ও বর্তমানের কথা শুনতে পারলে একটু আশ্বস্তবোধ করি। যেমন, কাউকে ধরা হয়েছে, শাস্তি প্রদান করা হয়েছে, শনাক্ত করা হয়েছে, এ অতীতটি আমরা শুনতে চাচ্ছি।’
মিজানুর রহমান আরো বলেন, ‘আমরা আশা করব যাদের ওপর দায়িত্ব অর্পিত করা হয়েছে তারা যেন সে ব্যাপারে সজাগ থাকেন এবং আমাদের আশ্বস্ত করেন। কেননা যদি প্রকৃত দোষীদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা না যায়, তাহলে জনমনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। যতক্ষণ পর্যন্ত মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে ততক্ষণই কিন্তু মানবাধিকার হুমকির সম্মুখীন থাকে।’
বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে মিজানুর রহমান বলেন, ‘বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কখনোই কোনো সমাজে কোনো সভ্য রাষ্ট্রে যেখানে আইনের শাসনের ন্যূনতম একটি মানদণ্ড আছে, কখনোই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। সব সময় আমরা এটিকে সমালোচনা করি। এটাকে পরিত্যাজ্য বলে মনে করি। মানবাধিকার কমিশন একা নয় সবাইকে সমস্বরে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একে রুখে দিতে হবে।’
হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে ‘মানবাধিকার সুরক্ষায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করেন মিজানুর রহমান। জেলা প্রশাসক শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন পুলিশ সুপার হামিদুল আলম, সিভিল সার্জন মজিবুল হক ও গণপূর্ত নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান উল্লাহ। সভায় উপস্থিত ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা, সাংবাদিক ও মানবাধিকার নিয়ে কর্মরত বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা।