চালক মাদকাসক্ত হওয়ায় ২৬ জনের প্রাণ গেছে : তদন্ত কমিটি
মাদারীপুরের শিবচরের বাংলাবাজার ঘাট সংলগ্ন কাঁঠালবাড়ী ঘাটে পদ্মা নদীতে স্পিডবোট দুর্ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে জেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি। আজ রোববার দুপুরে মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুনের কাছে প্রতিবেদন জমা দেন তদন্ত কমিটির প্রধান স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মো. আজহারুল ইসলাম। চালক মাদকাসক্ত হওয়ায় পদ্মায় স্পিডবোট দুর্ঘটনায় ২৬ জনের প্রাণ গেছে বলে জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটিতে এ তথ্য উঠে এসেছে।
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, মাদকাসক্ত অবস্থায় চালক শাহআলম স্পিডবোট চালানোয় এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। বড় দুর্ঘটনার আগে তিনি মাঝ পদ্মা নদীতে আরেকবার দুর্ঘটনায় পড়তে যাচ্ছিলেন। তখন যাত্রীদের সতর্কতার কারণে দুর্ঘটনা ঘটেনি। পরবর্তীতে বড় দুর্ঘটনাটি ঘটে। দুর্ঘটনার আরও উল্লেখযোগ্য দিক ছিল, ঘাটে সিন্ডিকেট ও অব্যবস্থাপনা এবং লাইফ জ্যাকেট ছাড়া অতিরিক্ত যাত্রীবহন করে পদ্মা পারাপার।
জেলা প্রশাসক জানান, দুর্ঘটনারোধে ২৩টি সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। ২৩টি সুপারিশের মধ্যে কয়েকটি সুপারিশ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাস্তবায়ন করা হবে। কিছু সুপারিশ নৌ পরিবহণ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেব।
গত সোমবার শিমুলিয়া থেকে বাংলাবাজার ঘাটে আসার পথে কাঁঠালবাড়ীতে নোঙ্গর করা বাল্কহেডকে সজোরে ধাক্কা দেয় দ্রুতগতির একটি স্পিডবোট। এতে প্রাণ হারায় ২৬ জন যাত্রী। এতে আহত হন স্পিডবোটের চালকসহ পাঁচজন। দুর্ঘটনার পরে চালক মো. শাহ আলমকে গুরুতর অবস্থায় শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। প্রশাসনের নির্দেশে ওই চালকের ডোপ টেস্টের নমুনা সংগ্রহ করে রাখা হয়। পরে তাঁর ডোপ টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
এদিকে মর্মান্তিক এই ঘটনায় কাঁঠালবাড়ী ঘাটের নৌপুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) লোকমান হোসেন বাদী হয়ে শিবচর থানায় ঘাটের ইজারাদার শাহআলম খান, স্পিডবোটের দুই মালিক চান্দু মিয়া ও রেজাউল এবং চালক শাহআলমের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন। এই ঘটনায় মাদারীপুরের জেলা প্রশাসন থেকে স্থানীয় সরকার অধিদপ্তরের উপপরিচালক আজহারুল ইসলামকে প্রধান করে ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।