মিতু হত্যা : বাবুল রিমান্ডে, ছিলেন বিমর্ষ
চট্টগ্রামে মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যার মামলায় তাঁর স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।
আজ বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার জাহান এ আদেশ দেন।
আসামি বাবুল আক্তারের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আরিফুর রহমান। তিনি রিমান্ড বাতিল ও জামিনের আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে আসামিপক্ষের আবেদন নাকচ করে দেন।
বাবুল আক্তারের আইনজীবী আরিফুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা মামলার বাদী ছিলাম। পুলিশ যথাযথ তদন্ত না করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। এখন উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। আমরা ঘটনার শিকার। উচ্চ আদালতে যাব। আশা করি, সেখানে ন্যায়বিচার পাব।’
বিকেল ৩টার কিছু আগে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে আদালত ভবনের দ্বিতীয় তলায় হাজির করা হয় বাবুল আক্তারকে। এ সময় তাঁকে খুব বিমর্ষ দেখাচ্ছিল।
বাবুল আক্তারকে আদালতে হাজির করে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আদালত পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ ছাড়া, মিতু হত্যায় বাবুল আক্তারের দায়েরকৃত মামলার ফাইনাল রিপোর্ট আদালতে দাখিল করা হয়।
রিমান্ডের আবেদনে পিবিআই বলেছে, হত্যাকাণ্ডে কারা জড়িত এবং কী উদ্দেশ্যে খুন, সে সম্পর্ক জানতে আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।
এর আগে আজ বুধবার দুপুর ২টার দিকে মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যার অভিযোগে চট্টগ্রামে সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় নিহত মাহমুদা খানম মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন এ মামলা করেন।
মামলা করার পর সংবাদ সম্মেলনে বাদী মোশাররফ অভিযোগ করেন, বাবুল আক্তারের সঙ্গে এক এনজিও কর্মীর পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় তাঁর মেয়ের সঙ্গে বাবুলের ঝগড়া হয়। মৃত্যুর আগে মিতু বিষয়টি তাঁদের জানিয়েছিলেন। পারিবারিকভাবে তাঁরা বিষয়টি সমাধানেরও চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সফল হননি। একপর্যায়ে বাবুল ও ওই নারী মিতুকে মেরে ফেলার হুমকি দেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
মামলায় বাবুলসহ আটজনকে আসামি করা হয়েছে। বাকি সাতজনের নাম আগের মামলায় পুলিশের তদন্তে এসেছিল। আসামিরা হলেন- বাবুল আক্তার, কামরুল সিকদার মুসা, এহতেশামুল হক ভোলা, মোহাম্মদ ওয়াসিম, মোহাম্মদ আনোয়ার, মোহাম্মদ শাহজাহান, মোহাম্মদ সাজু ও মোহাম্মদ কালু।
মোশাররফ হোসেন আরও বলেন, বাবুলের পরিকল্পনায় আসামিরা তাঁর মেয়েকে হত্যা করে। ২০১৩ সালে বাবুল যখন কক্সবাজারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন তখন এনজিওর এক মাঠকর্মীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক হয়। বিষয়টি মিতু জানতে পারলে ঝগড়া হয়।
ঘটনার পর বাবুল মোশাররফের বাসায় ছিলেন। মামলা করতে দেরি কেন করলেন—এসব ব্যাপারে জানতে চাইলে মিতুর বাবা বলেন, বাবুলের বিষয়ে তিনি পরে নিশ্চিত হয়েছেন। একই ঘটনায় দুটি মামলা হয় না। পিপিআই চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার পরে তিনি মামলা করেছেন।
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম ভূঁইয়া সাংবাদিকদের তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআই চিঠি দিয়েছে। আমরা মামলাটি পিবিআইকে দিয়ে দিচ্ছি।’