ভৈরবে কিশোর গ্যাংয়ের হাতে ইউপি চেয়ারম্যানের ছেলে খুন
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে কিশোর গ্যাংয়ের হাতে প্রবাল ভূইয়া (১৭) নামে এক কিশোর খুন হয়েছে। পরে স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যে গতকাল মঙ্গলবার রাতে দুর্জয় মোড় এলাকার শাকিল মোটরসের তালা ভেঙে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে।
নিহত কিশোর প্রবাল ভৈরব বাসস্ট্যান্ড এলাকার মাতৃকা জেনারেল হাসপাতালের মালিক মোহাম্মদ হোসেন ভূইয়ার ছেলে। তিনি নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।
হোসেন ভূইয়া পরিবার নিয়ে হাসপাতালের ওপর তলায় বসবাস করেন। চার ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে চতুর্থ সন্তান ছিল নিহত প্রবাল। সে গত বছর এসএসসি পরীক্ষায় এক বিষয়ে অকৃতকার্য হয়।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, গতকাল বিকেলে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় স্থানীয় কয়েক কিশোরের মধ্যে ঝগড়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসার আগেই তারা পালিয়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পর বাসস্ট্যান্ড এলাকার জিল্লুর রহমানের ছেলে এবং পৌর কাউন্সিলর শহিদুল ইসলাম শিমুলের চাচাত ভাই, স্থানীয়ভাবে কিশোর গ্যাং লিডার হিসেবে পরিচিত অন্তর (১৮) ও তার কয়েক সহযোগীকে রক্তমাখা কাপড়ে ওই এলাকা থেকে পালিয়ে যেতে দেখে স্থানীয় লোকজন।
পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ কাউন্সিলর শিমুলের মালিকানাধীন শাকিল মোটরসের তালা ভেঙে ভেতর থেকে প্রবালের লাশ উদ্ধার করে।
রুমের ভেতর দেয়াল ঘেঁষে কাঁত হয়ে পড়ে থাকা রক্তাক্ত লাশটির পাশে একটি চটের খালি বস্তা ছিল। লাশটিকে বস্তাবন্দি করে গুম করতেই খালি চটের বস্তাটি আনা হয়েছিল বলে পুলিশের ধারণা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ রাতেই প্রবালের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। ময়নাতদন্তের জন্য তার লাশ আজ বুধবার সকালে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। খুনিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে বলেও জানান ওসি।
এদিকে নিহত প্রবালের ভাই ডা. প্রিন্স ভূইয়া জানান, এই চক্রটি ঈদের দিনও তাঁর ছোট ভাইয়ের ওপর হামলা করেছিল। তখন তারা বিষয়টিকে গুরুত্ব দেননি। এটিকে সমবয়সীদের ঝগড়া বলে মনে করেছিলেন তারা। তবে সে ঘটনার পর থেকে প্রবাল খুব আতঙ্ক আর ভয়ের মধ্যে দিন কাটাত। খুব একটা বাইরে বের হতো না।
ডা. প্রিন্স দাবি করেন, অন্তর চক্র তাঁর ছোট ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। লাশ দাফনের পর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করবেন বলেও জানান তিনি।