পাবনায় নিখোঁজ শিশুর খোঁজ মেলেনি, পরিবারের ক্ষোভ
দীর্ঘ ৩০ ঘণ্টা চেষ্টার করেও পাবনার বেড়া উপজেলায় বালিতে চাপা পড়ে নিখোঁজ হওয়া শিশুটির হদিস মেলেনি। আজ মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
এদিকে, শিশুটিকে উদ্ধার না করেই অভিযান শেষ করায় ক্ষোভ জানিয়েছে নিখোঁজ শিশুর পরিবার।
বেড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহবুব হাসান ও বেড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার এ অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করেন।
সূত্র জানায়, পাবনার বেড়া উপজেলায় হাটুরিয়া-নাকালিয়া ইউনিয়নের পেঁচাখোলা গ্রামে যমুনা নদী থেকে বালি তুলে পুকুর ভরাট করা হচ্ছিল। পেঁচাকোলা গ্রামের মো. আযম আলীর ছেলে শিশু আসাদুল্লাহ (৭) এই কাজ দেখার জন্য সেখানে গিয়ে নিখোঁজ হয়।
নিখোঁজ শিশুটির পরিবার জানায়, গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার পর থেকে শিশু আসাদুল্লাহকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। শিশুটির পরিবারের লোকজন বিভিন্নস্থানে তাঁকে খোঁজাখুঁজি করে। এক পর্যায়ে আসাদুল্লাহর খেলার সঙ্গী ও প্রতিবেশী সোহাগ (৭) নামের আরেক শিশু জানায়, সকাল ৮টার দিকে আসাদুল্লাহ ও সে ওইস্থানে বসে পাইপের মাধ্যমে বালু তোলা ও পানি পড়া দেখছিল। এক সময় সোহাগ বাড়ি চলে গেলেও আসাদুল্লাহ ঘটনাস্থলেই বসে থাকে। এরপর থেকে তাকে আর পাওয়া যাচ্ছিল না।
এ ঘটনায় অনেকেই ধারণা করছেন শিশুটি পানি মেশানো বালুর মধ্যে পড়ে ডুবে গিয়ে থাকতে পারে।
পরে নিহত শিশুটির স্বজনরা ওই স্থানে খোঁজাখুঁজি করেন। তাঁরা ব্যর্থ হলে বেড়া ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স ও পুলিশকে খবর দেয়। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা কোদাল, বেলচা দিয়ে ঘণ্টা দুয়েক বালু সরিয়ে শিশুটির খোঁজ পায়নি। শেষে সন্ধ্যার পর থেকে রাত ১টা পর্যন্ত এবং পরদিন মঙ্গলবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভেকু মেশিনের সাহায্যে ওই স্থানের দুইটি পুকুরের বালু সরিয়ে শিশুটিকে আবারও খোঁজ করেন। এসব চেষ্টার পর আজ বিকেল ৪টার দিকে উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত করা হয়।
নিখোঁজ শিশুটির বাবা মো. আযম আলী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার ছেলেকে উদ্ধার না করেই অভিযান শেষ করা অমানবিক। এ উদ্ধার অভিযান চালু রাখার অনুরোধ জানাচ্ছি।’
এলাকাবাসী অভিযোগ জানান, যমুনা নদী থেকে বালু তোলা পুরোপুরি নিষিদ্ধ। এর আগে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপের কারণে বালু তোলা বন্ধ ছিল। কিন্তু নজরদারি কমে যাওয়ার সুযোগে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীরা আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
এ ব্যাপারে বেড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার জানান, ‘গতকাল থেকেই শিশুটিকে খুঁজে বের করার আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। উদ্ধার কাজে যত রকম কৌশল প্রয়োগ করা দরকার পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিস তা করেছে। ধারণা করা হচ্ছে ছেলেটি এখানে নেই। নদীর তীরবর্তী হওয়ায় নৌকায় মাইক নিয়ে নদীতে ছেলেটিকে খোঁজা হচ্ছে। শিশুটিকে খুঁজে বের করার জন্য আমাদের অভিযান সমাপ্ত করা হয়েছে। বালু ফেলার কাজে ব্যবহৃত বাল্কহেড ও পাইপ জব্দ করে থানায় আনা হয়েছে।’