মাদারীপুরে প্রথম দিনে ঢিলেঢালা লকডাউন পালিত
মাদারীপুরে শুরু হয়েছে সাতদিনের কঠোর লকডাউন। আন্তজেলা ও দূরপাল্লার সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। রাস্তায় ইজিবাইক, রিকশার চলাচল ছিল অন্য দিনের তুলনায় কিছুটা কম।
আজ মঙ্গলবার সকাল থেকেই জেলার নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দোকান ছাড়া প্রায় সব ধরনের দোকান বন্ধ রয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় দোকান খোলা থাকতে দেখা গেছে। সাধারণ মানুষের চলাচলও ছিল কম।
জেলায় প্রথম দিনের লকডাউন কিছুটা ঢিলেঢালাভাবে পালিত হয়েছে।বাজারগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই চলছে কেনাকাটা।
আজ সকালেই বরিশাল থেকে ছেড়ে আসা দূরপাল্লার বাসসহ অন্যান্য গাড়ি মাদারীপুর-ঢাকা মহাসড়ক দিয়ে বিনা বাধায় অনায়সে চলাচল করছে। জেলায় করোনা ভাইরাস বৃদ্ধি পাওয়া ও পার্শ্ববর্তী গোপালগঞ্জ জেলায় ভারতের ভ্যারিয়েন্ট পাওয়ায় এই লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ব্যাপারে গতকাল সোমবার রাতে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে জেলা প্রশাসন।
এদিকে, জনসাধারণের মধ্যে লকডাউন মানার তেমন কোনো আগ্রহী দেখা যায়নি। স্বাভাবিকভাবেই চলাফেরা করছেন জনসাধারণ। লঞ্চ, স্পিডবোট বন্ধ রয়েছে। তবে জরুরি সেবার যানবাহন নিয়ে বাংলারবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল করছে। মাঠ পর্যায় লকডাউন কার্যকর করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করার কথা বলছে স্থানীয় প্রশাসন।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলায় করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত ২০ হাজার ২৪৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এরমধ্যে দুই হাজার ৫৩৪ জন এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এখন পর্যন্ত দুই হাজার ২৫৯জন সুস্থ হয়েছেন। চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২৪৫ জন। এরমধ্যে আইসোলেশনে একজন ও হোম আইসোলেশনে ২৪৪ জন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। এতে জেলায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩১ জনে।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘জেলার চারটি উপজেলার মধ্যে তিনটি উপজেলার সঙ্গেই গোপালগঞ্জের কোটালাপাড়া ও মকসুদপুর উপজেলা সীমান্ত। কোটালীপাড়া ও মকসুদপুর উপজেলার সঙ্গে মাদারীপুরের এই তিন উপজেলার মানুষের অবাধ যাতায়াত। কোটালীপাড়ায় ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট (ডেলটা করোনা) পাওয়া গেছে। এটি সীমান্তবর্তী এলাকা মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার সবচেয়ে বেশি কাছে। এতে মাদারীপুর রয়েছে চরম ঝুঁকিতে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৮টি নমুনা পরীক্ষায় ১৮ জন শনাক্ত হয়েছে। নমুনা পরীক্ষায় এর হার ৩৭ দশমিক ০৫ শতাংশ। ফলে জেলায় করোনা ভাইরাসের আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় এজন্য লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে। জেলার সাধারণ মানুষদের বলব, আপনারা খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হবেন না। যদি ঘর থেকে বের হতে হয় তা হলে অবশ্যই মাস্ক পরে বাইরে বের হবেন এবং সরকারি নির্দেশনা মেনে চলাচল করবেন।’