‘ঘরে চাল থাকা লাগবে না?’
রাজধানীর কাঁঠালবাগান এলাকা। সেখানে লাকি হোটেলের মোড়ে মানুষ আর মানুষ। খোলা আছে চায়ের দোকান ও সেলুন। দেখা গেছে জনসমাগম। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে সরেজমিনে এ দৃশ্য দেখা গেছে। এসব দোকানপাট সকাল থেকেই খোলা রাখা হয়েছে।
আমীন আলী নামের এক চা-দোকানির কাছে প্রশ্ন রাখা হয়েছিল, মাঠে আছে সেনাবাহিনী, পুলিশ বলছে মামলা দেবে, তবুও দোকান খুলেছেন কেন? এমন প্রশ্নে আমীন আলী বলেন, ‘ঘরে চাল থাকা লাগবে না? বাচ্চাদের অনেক খরচ। এই লকডাউন লকডাউন করে কিছুই হচ্ছে না। ইনকাম কমে গেছে। বারবার লকডাউন। তাকিয়ে দেখেন, সবাই বাইরে। আমাকে ঘরে রেখে আপনাদের লাভ কী?’
ওই দোকানে নাসির নামের একজন চা পান করছিলেন। তিনি বলে ওঠেন, ‘রাস্তায় গিয়ে দেখেন, শুধু বাস বন্ধ, আর সব চলছে। কীয়ের লকডাউন? সব চলছে।’
লাকি হোটেলের মোড়েই দুটি সেলুনের দোকান খোলা রাখা হয়েছে। মানুষজন চুল কাটানোর জন্য সেখানে আসছেন। এক দোকানিকে গিয়ে এই প্রতিবেদক চুল কাটানোর কথা বলতেই ভেতরে বসতে বললেন। এরপর বলা হলো, যদি সেনাবাহিনী-পুলিশ আসে? তখন তিনি বলেন, ‘গেট তাড়াতাড়ি বন্ধ করে দেব।’ সেলুনটি একটি বাসার নিচে। গেট লাগিয়ে দিলে দেখার সুযোগ কম। পরে তাঁর কাছে নাম জানতে চাইলে বলেন, ‘আমার ক্ষতি করবেন নাকি?’
পাশেই একটি ফ্লেক্সিলোডের দোকান। ওই দোকানে গিয়ে ফ্লেক্সি করার কথা বলা হলে তিনি দিয়ে দেন। পরে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ভাই, সবই খোলা। আমি বন্ধ রেখে কী করব? পেট আগে না কি করোনা আগে?’
ওই মোড়টির আশপাশে ফলের দোকান, মুদিখানার দোকান, হোটেলসহ বেশিরভাগ দোকানই খোলা রাখা হয়েছে। অন্তত অর্ধেক মানুষের মুখে মাস্ক দেখা যায়নি।
এরপর রাজধানীর কারওয়ান বাজারের মূল সড়কে এসে দেখা যায়, বাস বাদে ব্যক্তিগত প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল ও রিকশা চলাচল করছে। ১৫ মিনিটের মধ্যে পুলিশ কাউকে আটকে রেখেছে, এমনটি দেখা যায়নি। তবে কারওয়ান বাজারের সার্ক ফোয়ারার ট্রাফিক বক্সের পাশে থাকা ট্রাফিক সার্জেন্ট আশিক বলেন, ‘সকাল থেকে অপ্রয়োজনে বের হওয়ার অভিযোগে দুই মোটরসাইকেল চালককে মামলা দেওয়া হয়েছে এবং তাদেরকে সতর্ক করে বাসায় পাঠানো হয়েছে। আর যাদের প্রয়োজন রয়েছে বাইরে আসার, তারা এসেছে। যৌক্তিক কারণ দেখালে আমরা তাদের যেতে দিচ্ছি।’