নওগাঁয় একদিনে পাঁচজনের মৃত্যু, চলছে সর্বাত্মক লকডাউন
নওগাঁয় করোনাভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় একদিনে সর্বোচ্চ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে নতুন করে ১১০ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
এদিকে, দ্বিতীয় ঢেউয়ের ব্যাপকতা রোধে দেশব্যাপী সর্বাত্মক লকডাউনের প্রথম দিন আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে নওগাঁয় সর্বাত্মক লকডাউন পালিত হচ্ছে।
শহরসহ গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন হাটবাজার দুএকটি ওষুধের দোকান ছাড়া সবধরনের দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। বাস, ট্রাক, পিক-আপ, রিকশাভ্যান, বেবিট্যাক্সি, টমটম, সিএনজি, অটোরিকশাসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড় সমূহে পুলিশ এবং জেলা প্রশাসনের কঠোর সতর্ক নজরদারি লক্ষ্য করা গেছে। সব রাস্তায় যানবাহন নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে।
জেলা প্রশাসক মো. হারুন-অর-রশীদ, পুলিশ সুপার প্রকৌশলী মো. আব্দুল মান্নান মিয়া সরাসরি রাস্তায় নেমে এসব ব্যবস্থা তদারকি করছেন।
পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, জেলায় মোট এক হাজার ৪০০ পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছে। পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর পাঁচটি টিম এবং বিজিবির আটটি টিম পুরো জেলায় টহল অব্যাহত রেখেছে।
এদিকে, সিভিল সার্জন অফিসের কট্রোল রুম সূত্রে ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মনজুর-এ-মোর্শেদ জানান, জেলায় একদিনে সর্বোচ্চ পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে রানীনগর, আত্রাই ও বদলগাছী উপজেলায় একজন করে এবং পত্নীতলা উপজেলায় দুইজন। এ নিয়ে জেলায় করোনাভাইরাসে মোট মৃত্যু হলো ৮২ ব্যক্তির।
এই ২৪ ঘণ্টায় জেলায় নতুন করে ১১০ ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে সদর উপজেলায় ৪৯ জন, রানীনগরে ১০ জন, আত্রাইয়ে সাতজন, মহাদেবপুরে ৯ জন, মান্দায় তিনজন, বদলগাছিতে চারজন, পত্নীতলায় ১৭ জন, ধামইরহাটে পাঁচজন, নিয়ামতপুরে একজন এবং সাপাহার উপজেলায় পাঁচজন। এ নিয়ে জেলা মোট আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা চার হাজার ৬০০ জন।
এ সময় মোট ৩০৮ ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নওগাঁ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ২০২ জনের অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করে ৪১ ব্যক্তির এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজ পিসিআর ল্যাবে ১০৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৬৯ ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৩৫ দশমিক ৭১ শতাংশ।
এ সময় সুস্থ হয়েছে ৭৫ জন এবং সর্বমোট সুস্থ হওয়া ব্যক্তির সংখ্যা ৩২৪০ জন। সুস্থ হওয়ার পর বর্তমানে জেলায় করোনা আক্রান্ত রয়েছে ১৩৬০ জন। তাদের মধ্যে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করছে ৪০ জন এবং অন্যরা নিজ নিজ বাড়িতে থেকে চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করছে।
এই ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়েছে ৩০৬ এবং ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে ২৪১ জনকে। বর্তমানে প্রাতিষ্ঠানিক ৪৭ জনসহ মোট কোয়ারেন্টিনে রয়েছে তিন হাজার ৮৭৮ জন।