পাবনায় একদিনে করোনা শনাক্তের রেকর্ড
পাবনায় করোনা পজিটিভ শনাক্তের রেকর্ড। গতকাল বুধবার সর্বোচ্চ ১৭৭ জনের পরই আজ বৃহস্পতিবার জেলায় করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে ১৯২ জনের।
পাবনার সার্জন ডা. মনিসর চৌধুরী জানান, জেলায় এক হাজার ২১০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে নতুন ১৯২ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত এটিই পাবনায় একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড।
সিভিল সার্জন জানান, করোনা সংক্রমণ প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ায় এবং জনসাধারণ স্বাস্থ্যবিধি না মানায় পাবনাতেও করোনার সংক্রমণ বেড়ে গেছে। সচেতন না হলে সংক্রমণ ও মৃত্যু দুই-ই বাড়বে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার মধ্য দিয়ে পাবনায় শুরু হয়েছে প্রথম দিনের ‘কঠোর লকডাউন’। প্রধান সড়কগুলোতে জনসমাগম কম হলেও খুলেছে অলিগলির দোকানপাট, চায়ের স্টল। পৌর শহরের বাইরে চলাচল করছে ইজিবাইক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মতো যন্ত্রচালিত বাহনও।
পাবনার পৌর এলাকার কালাচাঁদপাড়া, বেলতলা রোড, গোপালপুর, দিলালপুর, দক্ষিণ আটুয়া, কাচারীপাড়া, মণ্ডলপাড়া, বাবলাতলা, আরিফপুর ও বাস টার্মিনাল এলাকা ঘুরে দেখা যায়-সকালের গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যেই খুলেছে পাড়া-মহল্লার দোকানপাট। চায়ের দোকানগুলোতে ভিড় করে আড্ডা দিচ্ছে নানা বয়সের মানুষ। অনেকেই বের হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কতটা কঠোর হয় তা দেখতে।
শহরের লাইব্রেরি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, কাঁচা সবজির বাজার বসানো হয়েছে পাশের কৃষ্ণপুর বালিকা বিদ্যালয়ের খোলা মাঠে। ক্রেতা সমাগম কম, তবে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথ মানা হচ্ছে না ।
ক্রেতা-বিক্রেতার অনেকের মুখেই নেই মাস্ক। একই চিত্র শহরের বড় বাজার, মাসুম বাজারেও। খাদ্য ও নিত্যপণ্যের দোকান ছাড়াও নিউমার্কেট, প্রেসক্লাব গলি, দইবাজার, বড় বাজার এলাকার দোকানপাট খুলেছে ব্যবসায়ীরা।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেখলে সাটার বন্ধ করে ভেতরে অবস্থান নিচ্ছে। তারা চলে গেলে পাল্লা অর্ধেক খুলে বেচাকেনা করছে দোকানিরা।
এদিকে, সকাল থেকেই বৃষ্টি উপেক্ষা করে শহরের বিভিন্ন মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়ে মানুষ ও যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। বাইরে আসা লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তারা। তবে বাস টার্মিনাল ও হাজিরহাট এলাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক চলাচল করতে দেখা গেছে।
আরিফপুর এলাকার বাসিন্দা রাকিবুল হাসান জানান, জরুরি কিছু ওষুধ কিনতে বাইরে এসেছিলাম। আতঙ্কে ছিলাম হয়তো বাধার মুখে পড়ব। কিন্তু বাধা তো দূরের কথা, দেখে মনে হচ্ছে সবই যেন স্বাভাবিক। তিনি আরো বলেন, গ্রামপর্যায়ে যেভাবে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে, তাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর না হলে লকডাউন বাস্তবায়ন হবে না, ভয়াবহ পরিণতি হবে।
আজ সকাল থেকে লকডাউনে সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে জেলার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন ও পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান। এ সময় তারা অযৌক্তিক কারণে বের হওয়া এবং ব্যবসায়ীদের সতর্ক করেন।
এ সময় পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান বলেন, ‘জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের হলে পুলিশ কঠোর ব্যবস্থা নেবে। আমরা সতর্ক করেছি, এরপরও আইন অমান্য করলে গ্রেপ্তার করা হবে।’