মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে সাতজনের মৃত্যু, অক্সিজেন স্বল্পতার অভিযোগ
বগুড়ায় করোনা বিশেষায়িত সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে আজ শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাতজন রোগী মারা গেছেন। স্বজনরা অভিযোগ করেছেন, রোগীদের শ্বাসকষ্ট ছিল। কিন্তু হাসপাতালে এই সময়ে হাই-ফ্লো নাজাল ক্যানুলা সংকট থাকায় পর্যাপ্ত অক্সিজেন সাপোর্ট না পেয়ে তাদের মৃত্যু হয়েছে। এখনও সেখানে আটজন রোগী মুমূর্ষু অবস্থায় রয়েছেন।
এ ব্যাপারে বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. শফিক আমিন কাজল গণমাধ্যমকে জানান, তাদের হাসপাতালে রোগীর যে পরিমাণ চাপ সেখানে অন্তত ২০টি হাই-ফ্লো নাজাল ক্যানুলা প্রয়োজন। কিন্তু আছে মাত্র দুটি। এ কারণে চাহিদা অনুযায়ী রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে অধিক শ্বাসকষ্টে থাকা রোগীদের বাঁচানো কঠিন হয়ে পড়ছে।
একই সময়ে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে মারা গেছেন আরও চার করোনা রোগী। এ ছাড়া ৩৮০ জনের নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ১০০ জন।
মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের ধারণক্ষমতা ২০০ রোগীর হলেও আজ সকাল পর্যন্ত সেখানে রোগী ভর্তি আছে ২২৩ জন। এর মধ্যে ১০ জন রোগীর অক্সিজেনের মাত্রা একেবারেই নিচের দিকে, যাদের হাই-ফ্লো নাজাল ক্যানুলার মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহ করতে হচ্ছে। হাই-ফ্লো নাজাল ক্যানুলা সংকটের একই চিত্র জেলার অন্য হাসপাতালেও।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বগুড়ার তিন হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ডে শ্বাসকষ্ট থাকা রোগীদের জন্য অক্সিজেন সরবরাহের জন্য হাই-ফ্লো নাজাল ক্যানুলা আছে মোট ২৩টি। এর মধ্যে মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে দুটি, শজিমেক হাসপাতালে ১১টি এবং বেসরকারি টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০টি।
বগুড়ার সিভিল সার্জন গউসুল আজিম চৌধুরী বলেন, ‘গত বছর মোহাম্মদ আলী হাসপাতালকে করোনা বিশেষায়িত ঘোষণা করার সময় আইসিইউ ও কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা কোনাটাই ছিল না। পরে আট শয্যার আইসিইউ চালু করা হয়। কিন্তু হাই-ফ্লো নাজাল ক্যানুলার বরাদ্দ মিলেছে মাত্র দুটি। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা চালু হয়েছে।
হাই-ফ্লো নাজাল ক্যানুলা ছাড়া আইসিইউ শয্যা করোনা রোগীদের জন্য তেমন কাজে আসে না উল্লেখ করে সিভিল সার্জন বলেন, ‘শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে আরও কমপক্ষে ২৫টি হাই-ফ্লো নাজাল ক্যানুলা দরকার। বরাদ্দ চেয়ে দফায় দফায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে এখনও বরাদ্দ মেলেনি।’