গলাকাটা লাশ উদ্ধারের ২৪ ঘণ্টায় খুনের রহস্য উদঘাটন
গাজীপুরে গলাকাটা অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে। লাশ উদ্ধারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ক্লুলেস খুনের এ ঘটনার রহস্য উন্মোচন করেছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি)। এ ঘটনায় অভিযুক্ত যুবক জাহাঙ্গীর আলম সোহাগকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আজ শনিবার জিএমপির উপকমিশনার (অপরাধ-উত্তর) মো. জাকির হাসান এ তথ্য জানিয়েছেন।
গ্রেপ্তারকৃতের নাম জাহাঙ্গীর আলম সোহাগ (৩৮)। তিনি নীলফামারী জেলা সদর থানাধীন পূর্ব কুখাপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি গাজীপুরের দক্ষিণ পানিশাইল এলাকার পদ্মা হাউজিং এলাকার ভাড়া বাসায় থাকেন।
জিএমপির উপকমিশনার মো. জাকির হাসান জানান, গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী থানাধীন দক্ষিণ পানিশাইল এলাকার পদ্মা হাউজিংয়ে জমি কিনে পাঁচতলা বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেন আমিনুল ইসলাম খন্দকার ওরফে বাবুল (৬০)। এরই মধ্যে ভবনের দ্বিতীয় তলা পর্যন্ত কাজ সম্পন্ন হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ভবনে ভাড়াটিয়ারা পঁচা দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে তৃতীয় তলার একটি টয়লেটের ভেতর বাবুলের গলাকাটা লাশ দেখতে পায়। ওই টয়লেটের দরজা বাহির থেকে আটকানো ছিল। তিনি গত কয়েকদিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বাবুলের গলাকাটা অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে। ক্লুলেস এ খুনের ঘটনায় থানায় মামলা করা হয়।
জিএমপির উপকমিশনার জানান, কাশিমপুর থানা পুলিশের একাধিক টিম কাশিমপুর ও আশুলিয়া থানা এলাকায় বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। তারা তথ্য প্রযুক্তি ও ম্যানুয়েল ইন্টিলিজেন্সের সহায়তায় এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গাজীপুরের দক্ষিণ পানিশাইল এলাকার পদ্মা হাউজিংয়ের ভাড়া বাসা থেকে জাহাঙ্গীর আলম সোহাগকে গতকাল শুক্রবার সকালে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে বাবুলকে খুন করার কথা স্বীকার করেন সোহাগ। এ সময় তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো ছুরির অংশ জব্দ করা হয়। আজ শনিবার গাজীপুর মেট্রোপলিটন আদালতে হাজির করা হয় গ্রেপ্তারকৃত সোহাগকে। এ সময় তিনি আদালতের বিচারক মো. ইকবাল হোসেনের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে লাশ উদ্ধারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস আমিনুল ইসলাম খন্দকার ওরফে বাবুল হত্যার রহস্য উন্মোচন হয়েছে।
উপকমিশনার আরও জানান, নির্মাণাধীন বাড়ির দোতলার একটি কক্ষে একাই বসবাস করতেন বাবুল। গত ১৩ জুলাই রাত ৮টার দিকে সোহাগ ভবনের তৃতীয় তলায় উঠে ভবনের মালিক বাবুলকে মোবাইল ফোন করে। এ সময় সোহাগ জানায় ভবনের তৃতীয় তলায় কয়েকজন লোক উঠেছে। এ খবর পেয়ে বাবুল ওই তলায় গিয়ে লোকজনের সন্ধান করতে থাকেন। টয়লেটের ভেতর খোঁজার সময় পেছন থেকে বাবুলের মুখ চেপে ধরে ২০ হাজার টাকা দাবি করে সোহাগ। টাকা দিতে অস্বীকার করলে গার্মেন্টসের কাটিং ছুরি বাবুলের গলায় ধরে ভয় দেখালে দুজনের মধ্যে ধ্বস্তাধ্বস্তি হয়। এর এক পর্যায়ে বাবুল আত্মরক্ষার্থে সোহাগের আঙ্গুলে কামড় দেন। এ সময় ওই কাটার দিয়ে গলা কেটে বাবুলকে খুন করে সোহাগ। পরে নিহতের পাঞ্জাবির পকেট থেকে ৯৯৭ টাকা নিয়ে লাশ টয়লেটের ভেতরে রেখে দেন। পরে টয়লেটের দরজা বাহির থেকে আটকিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান বলে জানিয়েছেন সোহাগ।