গ্রাহকের টাকা নিয়ে উধাও এহসান গ্রুপ, ভুক্তভোগীদের মানববন্ধন
পিরোজপুরে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে মানববন্ধন করেছেন এহসানের ভুক্তভোগী সদস্য ও কর্মীরা। আজ রোববার সকালে পৌর শহরের উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন (পুরাতন সিও অফিস) এহসান গ্রুপের কার্যালয়ের সামনে ভুক্তভোগী নারী ও পুরুষদের অংশ গ্রহণে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় পুলিশ বাধা দেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন জামানত সংগ্রহকারী ফিল্ড কর্মকর্তা (এফও) ও পুঁজি ফেরত পাওয়ার জন্য আন্দোলন কমিটির আহ্বায়ক মো. রফিকুল ইসলাম, মাঠকর্মী মাওলানা মো. হারুন অর রশিদ, মো. জালাল উদ্দিন, সার্জেন্ট আব্দুর রশিদ প্রমুখ।
জেলার সদর উপজেলার জুজখোলা গ্রামের মো. মোস্তফা কামাল জানান, তাঁর ২০ লাখ টাকা এহসানের কাছে ব্যবসার জন্য জমা দেওয়া। কিন্তু এহসান গ্রুপ গত দুই বছর ধরে তাঁর টাকার জন্য পাওয়া কোনো টাকা দিচ্ছে না। এমন কি পুঁজির টাকাও ফেরত দিচ্ছে না। তিনি এখন চরম অসহায়।
পৌর শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ভুক্তভোগী ফেরদাউস জানান, ব্যবসার জন্য তাঁর এক লাখ টাকা জমা দেওয়া। তিনি কোনো ব্যবসার টাকা পাচ্ছেন না।
জানা গেছে, পৌর শহরের পুরাতন সিও অফিস সংলগ্ন অবস্থিত কার্যালয় ‘এহসান গ্রুপ’এর উদ্যোগে অধিক মুনফা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ১২ হাজার মাঠকর্মী (এফও) নিয়োগ দেন। ওই সব মাঠকর্মীদের মাধ্যমে জেলা ও জেলা পার্শ্ববর্তী বাগেরহাট, ঝালকাঠী, বরগুনা ও পটুয়াখীর প্রায় লক্ষাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। প্রথম দিকে কিছু গ্রাহককে মুনফা দিলেও গত দুবছর ধরে তাদের মুনফা প্রদান বন্ধ করে দেন।
গ্রাহকদের টাকা উদ্ধার কমিটির আহ্বায়ক মাওলানা মো. রফিকুল ইসলাম জানান, ওই এহসান গ্রুপের চেয়ারম্যান মাওলানা রাগিব হাসানের প্রতিষ্ঠিত ‘এহসান রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড বিল্ডার্স লিমিটেড ও নূরে মাদিনা’ নামের পৃথক দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ ১৬টি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তিনি গ্রাহকের ওই টাকা জমা নিয়ে তা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে বর্তমানে আত্মগোপনে রয়েছেন। এ ছাড়া তিনি গ্রাহকের টাকা নিয়ে তা বিদেশে পাচার করেছেন। বিভিন্ন সময় ওই টাকা ফেরত দেওয়ার তারিখ দিয়েও তিনি তা ফেরত দিচ্ছেন না। এমন কি প্রশাসনের সঙ্গে প্রতারণা করে তার ও প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা বিভিন্ন সম্পদ তাঁর নিকট আত্মীয়সহ ঘনিষ্টজনদের নামে লিখে দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে জানতে তাঁর মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। এমনকি তার কার্যালয়ের গেট বন্ধ রয়েছে।