মৌলভীবাজারে ফিলিং স্টেশনের ধর্মঘট প্রত্যাহার
প্রশাসনের মৌখিক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গতকাল রোববার থেকে কোনো গাড়িতেই তেল ও গ্যাস না দিয়ে ধর্মঘট পালন শুরু করেন ফিলিং স্টেশনের মালিকরা।
আজ সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকের পর ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেন ফিলিং স্টেশনের মালিকরা।
আজ দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য নেছার আহমদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) তানিয়া সুলতানা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মেহেদী হাসান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান, উপজেলা চেয়ারম্যান কামাল হোসেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবরিনা রহমান প্রমুখ।
জানা গেছে, চলমান করোনার সংক্রমণ ও বিধিনিষেধ চলাকালে প্রশাসন জরুরি রোগী বহনকারী গাড়ি ছাড়া সিএনজিচালিত অটোরিকশা, টমটম ও ব্যক্তিগত গাড়িতে তেল, গ্যাস না দিতে মৌখিকভাবে নির্দেশ দেয়। এ নিয়ে লকডাউন শুরুর পর থেকে প্রশাসন, ফিলিং স্টেশনের মালিক ও জরুরি রোগী বহনকারীদের বাকবিতণ্ডা চলে আসছিল।
গতকাল রোববার মেসার্স সাজ্জাদুর রহমান সিএনজি অ্যান্ড ফুয়েল ফিলিং স্টেশনে গর্ভবতী এক নারী, দুই বছরের অসুস্থ শিশু ও একজন ক্যানসার রোগীকে নিয়ে পৃথক তিনটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা আসে। ফিলিং স্টেশন কর্তৃপক্ষ তাদের সঙ্গে থাকা চিকিৎসাপত্র দেখে মানবিক কারণে গ্যাস দেয়। পরে ওই গ্যাস দেওয়ার অভিযোগে ফিলিং স্টেশনকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় ফিলিং স্টেশন কর্মচারীরা ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটকে অটোরিকশার ভেতরে অসুস্থ রোগী রয়েছে, তা তাৎক্ষণিক দেখায়। তা বিবেচনায় না এনে একতরফাভাবে জরিমানা করা হয়।
অভিযোগ রয়েছে, কয়েকদিন আগে ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার ও কর্মচারীকে নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে ধরে নেওয়ারও।
এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ফিলিং স্টেশনের মালিকরা গতকাল রোববার বিকেল থেকে ফিলিং স্টেশন বন্ধ করে দিয়ে ধর্মঘটে যান। ধর্মঘট চলাকালে সরকারি গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স, কৃষিকাজে ব্যবহৃত পাওয়ার টিলারসহ সব যানবাহনে তেল সরবরাহ থেকে তারা বিরত থাকেন। এতে জেলাজুড়ে সৃষ্টি হয় অচলাবস্থা।
মেসার্স সাজ্জাদুর রহমান সিএনজি অ্যান্ড ফুয়েল ফিলিং স্টেশনের সত্ত্বাধিকারী মনোয়ার আহমদ রহমান ও ইকবাল সিএনজি ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার নান্টু দাস বলেন, দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে বাকি ৬৩ জেলায় এ রকম নিষেধাজ্ঞা নেই। শুধু মৌলভীবাজার জেলায় গ্যাস-পেট্রল দিতে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা। আমরা লিখিত নির্দেশনা চাইলেও সেটা দেওয়া হয়নি। বিষয়টি আমরা সিলেট বিভাগীয় নেতাদের জানিয়ে ধর্মঘটে যাই।
এ ব্যাপারে আজ সোমবার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, ফিলিং স্টেশন মালিকদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে। ওই বৈঠকে জরুরি সেবায় নিয়োজিত যানবাহনকে তেল ও গ্যাস দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তাদের সরকারি প্রজ্ঞাপনের একটি কপিও দেওয়া হয়েছে।