দেশে ‘বঙ্গভ্যাক্স’ টিকার ট্রায়াল দিতে আইনি নোটিশ
দেশীয় কোম্পানি গ্লোব বায়োটেক উদ্ভাবিত করোনাভাইরাসের টিকা ‘বঙ্গভ্যাক্স’-এর ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমোদন দিতে স্বাস্থ্য সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আব্দুস সাত্তার পালোয়ান রেজিস্ট্রি ডাক ও সংশ্লিষ্টদের ই-মেইলে নোটিশটি পাঠান। নোটিশে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করা হবে বলে জানান এই আইনজীবী।
নোটিশে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের আগে ‘বঙ্গভ্যাক্স’ টিকা বানর বা শিম্পাঞ্জির শরীরে প্রয়োগ করে তা পরীক্ষা করার শর্ত দিয়ে গ্লোব বায়োটেককে দেওয়া বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের (বিএমআরসি) চিঠি প্রত্যাহারেরও দাবি জানানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য সচিব ছাড়াও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের (বিএমআরসি) পরিচালক, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে ওই নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে আইনজীবী আব্দুস সাত্তার পালোয়ান বলেন, স্বেচ্ছাসেবীদের শরীরে বঙ্গভ্যাক্স টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের আগে বানর বা শিম্পাঞ্জির শরীরে পরীক্ষা করার শর্ত দিয়ে বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদ (বিএমআরসি) গত ২২ জুন গ্লোব বায়োটেককে যে চিঠি দিয়েছে তা যেন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার করে নৈতিক অনুমোদন দেওয়া হয়। অথবা ফাইজার বা মডার্নার টিকার মতো ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলাকালে বানরের শরীরেও প্রয়োগের শর্ত দেওয়া হয়, সে দাবি জানানো হয়েছে।
নোটিশ পাঠানোর আগে গ্লোব বায়োটেক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছেন জানিয়ে আব্দুস সাত্তার পালোয়ান বলেন, আইনি পদক্ষেপের বিষয়ে আমি তাদের মতামত জানতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমাকে জানিয়েছেন যে তারা কোনো আইনি পদক্ষেপ নেবেন না। তাই জনস্বার্থ বিবেচনায় এবং একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমি নোটিশ পাঠিয়েছি।
আইনি নোটিশে বলা হয়, বানর বা শিম্পাঞ্জির শরীরে পরীক্ষা চালাতে হলে তৃতীয় পক্ষের গবেষণাগার (থার্ড পার্টি রিসার্চ ল্যাব) প্রয়োজন। কিন্তু বাংলাদেশে এই ধরনের কোনো গবেষণাগার নেই। এটা স্পষ্ট যে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমোদন না দিয়ে বানর বা শিম্পাঞ্জির শরীরে ট্রায়ালের জন্য শর্ত জুড়ে দেওয়ার অর্থ হচ্ছে এই ভ্যাকসিনটি যাতে আলোর মুখ না দেখে।
দেশে করোনাভাইরাসের মহামারি শুরুর পর গত বছরের ২ জুলাই ওষুধ প্রস্তুতকারী গ্লোব ফার্মার সহযোগী প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক টিকা তৈরির কাজ শুরুর কথা জানায়। সেদিন সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, খরগোশের ওপর এ টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগে ‘সফল’ হয়েছে। পরে গত বছর ৫ অক্টোবর গ্লোব বায়োটেক জানায়, ইঁদুরের ওপর প্রয়োগ করেও তাদের ওই সম্ভাব্য টিকা ‘কার্যকর ও সম্পূর্ণ নিরাপদ’ প্রমাণিত হয়েছে। গ্লোব বায়োটেকের উদ্ভাবিত তিনটি সম্ভাব্য টিকা পরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেট তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।