কথার শব্দে ঘুম ভেঙে যাওয়ায় ১০ শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে আহত, শিক্ষক গ্রেপ্তার
শিক্ষার্থীদের কথার শব্দে ঘুম ভেঙে যাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ১০ শিক্ষার্থীকে বেত দিয়ে পিটিয়ে আহত করেছেন হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ উল্লাহ নামের এক শিক্ষক। গতকাল শনিবার বিকেলে ঝালকাঠি সদর উপজেলার পোনাবালিয়া গ্রামের একটি মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে। গতকাল রাতেই ওই শিক্ষককে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয় এলাকাবাসী।
পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জানান, করোনার সময়ে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে জেলার কে. এ খান হাফেজি মাদ্রাসা চালু রাখা হয়। ওই প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া চালিয়ে আসছিলেন মাদ্রাসাটির একমাত্র শিক্ষক মোহাম্মদ উল্লাহ। শনিবার বিকেলে তিনি মাদ্রাসায় ঘুমিয়ে পড়েন। এ সময় শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করছিল। তাদের কথার শব্দে ওই শিক্ষকের ঘুম ভেঙে যায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষক মোহাম্মদ উল্লাহ কক্ষের দরজা আটকে ১০ শিক্ষার্থীকে বেদম প্রহার করেন। এতে শিক্ষার্থীরা ব্যথায় কান্নাকাটি করতে থাকলে সব শিক্ষার্থীকে কক্ষের মধ্যে আটকে রেখে বাইরে থেকে তালা ঝুলিয়ে দেন। মারধরের বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য সব শিক্ষার্থীকে ভয়ভীতিও দেখানো হয়।
মাগরিবের নামাজের সময় পেছন থেকে কৌশলে নলছিটি উপজেলার বারইকরণ গ্রামের প্রবাসী আব্দুর রহিমের ছেলে মো. সিয়াম (৯) পালিয়ে কাঁদতে কাঁদতে পোনাবালিয়া বাজারে গেলে এলাকাবাসী বিষয়টি জানতে পারে।
বাজারের শতাধিক ব্যক্তি মাদ্রাসা ঘেরাও করে শিক্ষক মোহাম্মদ উল্লাহকে আটক করে। এ সময় আহত শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
খবর পেয়ে রাতেই ঝালকাঠি সদর থানা পুলিশ ওই মাদ্রাসায় গিয়ে শিক্ষক মোহাম্মদ উল্লাহকে গ্রেপ্তার করে।
ঝালকাঠি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খলিলুর রহমান জানান, শিশু শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এক শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মাদ্রাসাটিতে মোট ১৩ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।
শিক্ষক হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ উল্লাহ দাবি করে জানান, পড়া না পারায় তাদের শাস্তি দেওয়া হয়েছে।