ডেঙ্গু হলে যে দিকগুলোর প্রতি বিশেষ নজর দেবেন
করোনা মহামারিতে নাকাল পুরো বিশ্ব। বাংলাদেশেও করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। এ সময়ে আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে ডেঙ্গু। প্রতি বছর এ সময়টাতে, বর্ষার এ সময়ে ডেঙ্গুর হার অনেক বেশি বেড়ে যায়। আমরা যদি হাসপাতালগুলোর দিকে লক্ষ করি, তাহলে দেখা যাবে করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাও কম নয়।
এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিনের একটি পর্বে ডেঙ্গু ভাইরাস নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সৈয়দ গোলাম মোগনী মাওলা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ডা. শারমিন জাহান নিটোল।
সঞ্চালকের এক প্রশ্নের জবাবে ডা. সৈয়দ গোলাম মোগনী মাওলা বলেন, ডেঙ্গির যে খারাপ দিক, সেটা হলো ব্লাড প্রেশার কমে যায়, যেটা আমরা ডাক্তারি ভাষায় বলি প্লাজমা লিকেজ। অর্থাৎ আমার যে রক্তনালী, এখান থেকে আমার প্লাজমা বা রক্তের যে পানীয় অংশ, জলীয় অংশ, সেটা আমার শরীরে চলে আসে, রক্তনালীর বাইরে চলে আসে। এর মাধ্যমে আমার প্রেশারটা কমে যায়। এটি একটি। আরেকটা হচ্ছে, ডেঙ্গি ভাইরাস, আমার অনুচক্রিকা, যাকে ডাক্তারি ভাষায় প্লেটলেট বলি, তার সাথে ইমিউনোলজিক্যাল, আপনার প্যাথোফিজলজির মাধ্যমে এই প্লেটলেটের কাউন্টটা কমে যায় এবং তাতে রক্তক্ষরণের প্রবণতা বেড়ে যায়। এই যে আপনার ব্লাড প্রেশার কমে যাওয়া, যখন অতিমাত্রায় ব্লাড প্রেশার কমে যাচ্ছে, তখন আমরা বলছি ডেঙ্গির শক সিনড্রোম। আর যখন আমরা বলছি, রক্তক্ষরণ হচ্ছে বেশি, তখন ডেঙ্গি হেমোরেজিক ফিভার। এটা হচ্ছে ডেঙ্গির মূল খারাপ দিক।
ডা. সৈয়দ গোলাম মোগনী মাওলা আরও বলেন, দর্শকের উদ্দেশে বলতে চাই, বিশেষভাবে দেখা গেছে, বিশেষ ক্ষেত্রে প্রথম দু-তিন দিনে জ্বর কমে গেলে, জ্বরটা চলে যাওয়ার পরবর্তী যে ৪৮ বা ৭২ ঘণ্টা, এ সময় জটিলতাগুলো সাধারণত দেখা দেয়। সুতরাং এ সময় খেয়াল রাখুন, আপনার ব্লাড প্রেশার বাসায় যদি মাপা সম্ভব হয়, অথবা আশপাশে ফার্মেসির সহযোগিতা নিয়ে ব্লাড প্রেশারটা মাপুন এবং খেয়াল রাখুন আপনার দাঁত মাজার সময় দাঁতের সাথে, বা আপনার লালা, কাশি, বমি; এগুলোর সাথে রক্তক্ষরণ হচ্ছে কি না। এর সাথে বেশি অসুস্থ হয়ে যাওয়া। যেমন—অতিরিক্ত শরীর ব্যথা, অতিরিক্ত দুর্বলতা, বমি, পেটের অতিরিক্ত ব্যথা; এই জিনিসগুলো ডেঙ্গুর খারাপ লক্ষণ। এই ব্যাপারগুলোতে আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে।