দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে হবে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আবদুল মোমেন বলেছেন, দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে, যেন ১৫ আগস্টের মত নৃশংস ঘটনা বাংলাদেশের মাটিতে আর কখনও না ঘটে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা এখনও থেমে নেই। অথনৈতিক উন্নয়ন ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশের অভাবনীয় সাফল্যের ফলে শত্রুর সংখ্যা বাড়তে পারে এবং তাদের মোকাবিলায় সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে। দেশের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণার বিষয়েও সবাইকে সচেতন থাকতে বললেন ড. মোমেন।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় গতকাল শুক্রবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ড. মোমেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর বাস্তবসম্মত পররাষ্ট্রনীতির কারণে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনও অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার ওপর সব সময় গুরুত্বারোপ করেন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব ও আদর্শ এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্ব ও অর্জনের বিষয়ে গবেষণার জন্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আহ্বান জানান তিনি ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অনুসরণ করার মাধ্যমে আমরা সোনার বাংলা গড়ে তুলতে পারব। বঙ্গবন্ধু সারা জীবন মানুষের সেবায় একাগ্রচিত্তে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন। মানুষের অধিকার আদায়ে তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিকসহ সব ধরনের বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। বঙ্গবন্ধু সবসময় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করেছেন এবং জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে প্রতিষ্ঠানিকতা অর্জনের ওপর জোর দিয়েছেন। মানুষের প্রতি ভালোবাসার জন্য বঙ্গবন্ধু আমাদের হৃদয়ে অক্ষয় হয়ে আছেন। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখিয়েছেন তিনি। ড. মোমেন বলেন, ১৯২৮ সালে কলকাতায় সংবর্ধনা প্রদানের সময় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বলেছিলেন, বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়ে যদি কোনো সংগ্রাম করে এবং কিছু অর্জন করতে চায়, তাহলে তারা অবশ্যই তা অর্জন করতে পারবে। সে সময়ের প্রায় ৪৩ বছর পরে স্বাধীন সার্বভৌম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু তা প্রমাণ করেছিলেন ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, শেখ হাসিনাও জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দেশের উন্নয়ন তথা উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছেন। বিশ্বে সংঘাত দূর করে টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘে শান্তির সংস্কৃতি চালু করেছেন। টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠিত হলে বিশ্বে কেউ উদ্বাস্তু হবে না।
ড. মোমেন উল্লেখ করেন, সম্প্রতি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান বাংলাদেশের অভাবনীয় সাফল্যের প্রশংসা করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর অনন্য মানবিক গুণাবলীর পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং নারীর ক্ষমতায়নে তাঁর নেতৃত্বের প্রশংসা করেন বিশ্ব নেতৃবৃন্দ।
আলোচনা সভায় মুখ্য আলোচক ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. মিজানুর রহমান। এ ছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান।