কন্যাশিশুকে পানিতে ফেলে হত্যা, মা কারাগারে
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় কন্যাশিশুকে পানিতে ফেলে হত্যার অভিযোগে রহিমা আক্তার রত্না (২০) নামে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে উপজেলার টনকি ইউনিয়নের বাইড়া গ্রামের একটি খাল থেকে ১৯ দিনের শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে আজ শনিবার রহিমা আক্তার রত্নাকে গ্রেপ্তারের পর দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে।
রত্না ওই গ্রামের প্রবাসী মজিবুর রহমানের স্ত্রী। বছরখানেক আগে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের ছয় মাস পরে মুজিবুর প্রবাসে চলে যান। গত ২৫ জুলাই কন্যাশিশুটির জন্ম হয়। নাম রাখা হয় রাবেয়া বশরী।
উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার জানান, শিশুটির দাদা বাদী হয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় হত্যা মামলা করেন। মা রহিমাকে আজ দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, কন্যাশিশু জন্ম দেওয়ায় শ্বশুর-শাশুড়ি প্রায়ই রহিমা আক্তার রত্নাকে মানসিক নির্যাতন করত। এদিকে সাংসারে আর্থিক অনটনের কারণেও মানসিকভাবে কষ্ট দিত। এ অবস্থায় মানসিক কষ্ট সহ্য করতে না পেরে গত বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে শ্বশুর-শাশুড়ি ও দেবর বাড়ির পাশে জমিতে কৃষিকাজে গেলে এই সুযোগে রাহিমা শিশুকন্যাকে বুকের দুধ পান করিয়ে বাড়ির পাশের খালে ফেলে দেন।
পরবর্তীতে রাহিমার শাশুড়ি জমি থেকে ফিরে নাতনীকে না পেয়ে এলাকায় খোঁজাখুজি শুরু করেন। একপর্যায়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
এরপর মুরাদনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর আবিদুর রহমানের নেতৃত্বে বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার, উপপরিদর্শক (এসআই) শাহনেওয়াজ ঘটনাস্থলে ছুটে যান। একপর্যায়ে পুলিশের সন্দেহ হলে ঘটনাস্থলের পাশের খালে জাল ফেলে তল্লাশি চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।
পরে পুলিশ শিশুটির মা রাহিমা আক্তার রত্না, দাদী রহিমা, দাদা বাচ্চু মিয়া, ননদ হালিমাকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এ সময় মা রাহিমা আক্তার রত্না নিজে পানিতে ফেলে হত্যার কথা স্বীকার করে বলে দাবি করে পুলিশ।
পুলিশ আরও জানায়, শিশুটির জন্মের পর থেকেই পারিবারিক বিভিন্ন মানসিক অত্যাচার সহ্য করতে হচ্ছিল রত্নাকে। মানসিক নির্যাতন সইতে না পেরে শিশুটিকে খালে ফেলে দেন তিনি।