দীর্ঘতম যুদ্ধের অবসান, কাবুল ছাড়ল যুক্তরাষ্ট্র
২০০১ সাল থেকে শুরু করে আফগানিস্তানে আজই প্রথম এমন পরিস্থিতি তৈরি হলো যেখানে দেশটিতে একজন আমেরিকান সেনাও নেই। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
সোমবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীর ফ্লাইট সি-১৭ সর্বশেষ আমেরিকানদের নিয়ে কাবুল ত্যাগ করে।
সিএনএনের খবরে বলা হয়, মার্কিন ৮২তম এয়ারবর্ন ডিভিশনের কমান্ডার মেজর জেনারেল ক্রিস ডোনাহু সর্বশেষ আমেরিকান হিসেবে আফগানিস্তানের মাটি ছাড়েন। তাঁর আগের ব্যক্তি হিসেবে সি-১৭ ফ্লাইটে ওঠেন কাবুলে নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স রোজ উইলসন।
১৫ আগস্ট তালেবান কাবুল দখলের পর থেকে এই দুই সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র এক লাখ ১৪ হাজারের বেশি মানুষকে কাবুল থেকে সরিয়ে এনেছে। এদের মধ্যে মার্কিন সামরিক বাহিনীর লোকজন ও তাদের দেশের কূটনীতিকসহ অন্যান্য নাগরিকেরাও রয়েছেন। বেশিরভাগ হচ্ছেন দুই দশকের যুদ্ধে বিদেশি সেনাদের সঙ্গে বিভিন্নভাবে কাজ করা আফগান। নিজেদের জীবনের নিরাপত্তার কথা ভেবে তারা দেশ ছেড়েছেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন কাবুল থেকে মার্কিন ও আফগান সহযোগীদের ফিরিয়ে আনার এই কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করাকে ‘পবিত্র দায়িত্ব’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এ ছাড়া দীর্ঘ দুই দশকের এই যুদ্ধকে মার্কিন ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন অভিযানগুলোর অন্যতম হিসেবেও আখ্যায়িত করেন তিনি।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক ব্রিফিংয়ে অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলেন, ‘আফগানিস্তানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো। এবার আমরা আমাদের কূটনীতির মাধ্যমে নেতৃত্ব দেব। সামরিক অভিযান সমাপ্ত। নতুন কূটনৈতিক যাত্রা শুরু হলো।’
গতকাল এক বিবৃতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘এখন, আফগানিস্তানে আমাদের সামরিক উপস্থিতি সমাপ্ত হলো।’ প্রত্যাহার কার্যক্রমে যারা সহযোগিতা করেছেন তাদেরকে ধন্যবাদ জানান বাইডেন।
এদিকে তালেবানের মুখপাত্র কারী ইউসুফ আলজাজিরা টিভিকে বলেন, ‘সর্বশেষ আমেরিকান সেনা কাবুল বিমানবন্দর ত্যাগ করেছে এবং এর মধ্য দিয়ে আমাদের দেশ পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা অর্জন করেছে।’
দ্রুতগতিতে গোটা আফগানিস্তান তালেবানের হাতে চলে যাওয়ার ঘটনায় প্রেসিডেন্ট বাইডেন ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন। রিপাবলিকানদের পাশাপাশি অনেক ডেমোক্র্যাট নেতাও বাইডেনের আফগানিস্তান নীতির কঠোর সমালোচনা করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার দুপুরে আমেরিকানদের উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের।